‘সাংস্কৃতিক যোগাযোগে কাটবে রাজনৈতিক বাধা’

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক-ব্যবসায়িক ও কূটনৈতিক যোগাযোগের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক যোগাযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ শাহরিয়ার আলম।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Nov 2015, 07:18 PM
Updated : 26 Nov 2015, 07:28 PM

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে প্রথম আন্তর্জাতিক মৃত্তিকালগ্ন নাট্যোৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে নানা যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।

“সরকারের একটি লক্ষ্য আছে, বন্ধ হয়ে যাওয়া যোগাযোগগুলো পুনরায় চালু করা। এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে যদি সাংস্কৃতিক যোগাযোগ বৃদ্ধি পায় তো অনেক রাজনৈতিক সমস্যার সমাধানেও সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।”

শাহরিয়ার আলম (ফাইল ছবি)

ভারত –বাংলাদেশের নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণে মৃত্তিকালগ্ন নাট্যোৎসবের ভূয়সী প্রশংসা করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “৫৫ হাজার বর্গমাইলের সীমানা পেরিয়ে বাংলাদেশ বাইরের মানুষের সঙ্গে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের মাধ্যমে সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে, এই উৎসব তার জলজ্যান্ত প্রমাণ। বাংলাদেশের ব্যাপ্তি, অবস্থান, চিন্তা-চেতনার স্বাক্ষর রেখেছে এই নাট্যোৎসব।”

বাংলাদেশের নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তাদের জন্য এই উৎসবটি অনেকটা বিদেশযাত্রার মত।”

প্রতি দুই বছর অন্তর এই উৎসব আয়োজনের ঘোষণা আসার পর শাহরিয়ার আলম বলেন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এ ধরনের আয়োজনে সামিল হতে চায়।

আয়োজকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “এরপর যখন কোনো আন্তর্জাতিক উৎসব করবেন, শিল্পীর তালিকা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন। আমার বরাবর একটি দরখাস্ত করবেন। বাকিটা আমরা দেখব।”

উৎসবের বিশেষ অতিথি ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বাংলাদেশ ও ভারতের নাট্যদলগুলোর অংশগ্রহণে আগে অনেক নাট্যোৎসব হলেও এ উৎসবটি একেবারে আলাদা। পশ্চিম বাংলার বাইরেও ভারতের অন্যান্য রাজ্যে যে নৃতাত্ত্বিক সংস্কৃতির এমন ধারা রয়েছে, তা এই নাট্যোৎসবের মাধ্যমে বাংলার দর্শকের সামনে তুলে ধরা হল।”

শেকড়ের সংস্কৃতিকে অবজ্ঞা করে শহুরে সংস্কৃতি চর্চায় শশব্যস্ত নাটকপাড়া- এমন অভিযোগ করে নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার বলেন, “মৃত্তিকালগ্ন নাট্যোৎসবের ধারাকে টিকিয়ে রাখতে হলে সরকারি পর্যায় থেকে উৎসাহ-পৃষ্ঠপোষকতা আরও বৃদ্ধি করতে হবে।”

শিল্পকলা একাডেমির নন্দন মঞ্চে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।

উন্মক্ত পরিবেশনায় অংশ নেয় ভারতের ঝাড়খণ্ডের শিব নৃত্যকলা কেন্দ্র। সন্ধ্যা ৬টায় পরীক্ষণ থিয়েটার হলে ওঁরাও নাট্যদল এর পরিবেশনা, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মূল মিলনায়তনে ভারতের শিব নৃত্যকলা কেন্দ্রের সরাইকেল্লা  নৃত্য পরিবেশনায় পর্দা নামে সপ্তাহব্যাপী নাট্যোৎসবের।

সম্প্রীতি নাট্যোৎসব পর্ষদের আয়োজনে ১৯ নভেম্বর শুরু হওয়া এ উৎসবে বাংলাদেশ ও ভারতের পূর্বাঞ্চলের ১৬টি মৃত্তিকালগ্ন নাট্যদল অংশ নেয়।