‘আল্লাহর হুকুমে’ ফাঁসি কার্যকর: প্রধানমন্ত্রী

যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সমালোচনার নিন্দা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একাত্তরে এই ঘাতকদের হাতে যারা স্বজন হারিয়েছেন তাদের বেদনা বুঝতে হবে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Nov 2015, 05:13 PM
Updated : 26 Nov 2015, 05:21 PM

‘আল্লাহর হুকুম’ ছিল বলে যুদ্ধাপরাধীদের দণ্ড কার্যকর হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদ ও পার্লামেন্টারি বোর্ডের বৈঠকের শুরুতে বক্তব্য দিতে গিয়ে এ বিষয়ে কথা বলেন শেখ হাসিনা।

যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দুই দিন পর মঙ্গলবার জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের দপ্তর এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দেয়। এতে ট্রাইব্যুনালের বিচার প্রক্রিয়ার ‘স্বচ্ছতা ও আন্তর্জাতিক মান' নিয়ে প্রশ্ন তুলে মৃত্যুদণ্ড বিলোপের আহ্বান জানানো হয়।

এ বিষয়ের দিকে ইঙ্গিত করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিশ্লেষণের নামে মায়া কান্না, যেন বুকটা ফেটে যাচ্ছে!

“যারা স্বজন হারিয়েছে, তারা বুঝবে ব্যথাটা কোথায়।”

২৫ বছরের শোষণ-বঞ্চনার পর বাঙালিদের স্বাধিকারের দাবিকে দমন করতে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ নির্বিচার হত্যাকাণ্ড শুরু করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। তখন প্রতিরোধ ‍যুদ্ধে নামে বাঙালিরা। নয় মাসের রক্তাক্ত সংগ্রামের পর স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যূদয় ঘটে।   

একাত্তরে বাঙালি নিধনে পাকিস্তানি বাহিনী এদেশেরই কিছু দোসর পেয়েছিল। জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ রাজনৈতিক দল হিসেবে তাতে সমর্থন দেয়; গঠন করে রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনী।

একাত্তরে আল বদর বাহিনীর প্রধান ছিলেন মুজাহিদ। বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন তারই নেতৃত্বে হয়েছিল বলে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে উঠে এসেছে।

অন্যদিকে মুসলিম লীগ নেতা পাকিস্তান গণপরিষদের সাবেক স্পিকার ফজলুল কাদের চৌধুরীর ছেলে সালাউদ্দিন কাদের একাত্তরে চট্টগ্রামের ত্রাস হিসেবে কুখ্যাত ছিলেন।

গত রোববার প্রথম প্রহরে শীর্ষ পর্যায়ের এই দুই যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি কার্যকর করা হয়।

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “একাত্তরে যারা মানুষের ক্ষতি করেছে তাদের বিচার হবে। এটা জাতির কাছে আমাদের ওয়াদা।”

যুদ্ধাপরাধ মামলার রায় ঘোষণা এবং দণ্ড কার্যকরের পর নিয়মিত হরতাল ডেকে আসছে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামী, যুদ্ধাপরাধে দণ্ডিতদের অধিকাংশই তাদের নেতা।

দলটির এই কর্মসূচির দিকে ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, “২/১টা হরতাল দিয়ে এই বিচার বন্ধ করতে পারবে না।

“এটা আল্লাহর হুকুম।”