বুধবার এই মামলার রায়ে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মো. সালেহ উদ্দিন বলেন, “পুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার দুজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার তদন্তে এরূপ গাফিলতি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”
পুলিশ পরিদর্শক এস এম শাহাদাৎ হোসেন ও পুলিশ পরিদর্শক মাহবুবে খোদা পালাক্রমে আলোচিত এই মামলাটির তদন্ত করেন।
চার বছর আগের এই মামলায় বুধবার দেওয়া রায়ে একমাত্র আসামি পরিমল জয়ধরকে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
আসামি পক্ষের যুক্তির অসারতা, ধর্ষিতের জবানবন্দি এবং আসামি পরিমলের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থা পর্যালোচনায় এই শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, “তারা (তদন্ত কর্মকর্তারা) সঠিকভাবে তদন্ত করলে ভিকটিমের অভিযোগ সমর্থনের জন্য তা অধিকতর সহায়ক হতো।
“তবে তাদের তদন্তের দুর্বলতার কারণে এ মামলার আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়নি বলা যায় না।”
শুনানিতে আসামির নির্দোষিতার পক্ষে তার আইনজীবীদের যুক্তি ছিল- পরিমল ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ হোসনে আরা বেগমকে অপসারণের উদ্দেশ্যে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পর্ষদের দ্বন্দ্বের শিকার।
রায়ে বলা হয়, “আসামিপক্ষ থেকে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের জেরা করে তা প্রমাণ করা যায়নি।”
পরিমল ছিলেন ভিকারুননিসার বসুন্ধরা শাখার বাংলার শিক্ষক। ধর্ষিতের বাবা ২০১১ সালে করা এই মামলায় ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ হোসনে আরা এবং বসুন্ধরা শাখার প্রধান লুৎফর রহমানকে আসামি করেছিলেন। ২০১২ সালে আদালতে অভিযোগ গঠনের সময় তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়।
আসামিপক্ষের যুক্তি ছিল, পরিমল হাকিমের কাছে ১৬৪ ধারায় যে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন, তা স্বেচ্ছায় নয়।
কিন্তু জবানবন্দি গ্রহণকারী হাকিম শাহরিয়ার মাহমুদ আদনান আদালতে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, যথানিয়মে তিনি স্বীকারোক্তি নিয়েছিলেন। তিনি মনে করেন, আসামির এ স্বীকারোক্তি স্বেচ্ছাপ্রণোদিতই ছিল।