‘জিহাদি জন’ নামে আইএস এর প্রচার, ঢাকায় গ্রেপ্তার ১

‘জিহাদি জন’ নাম ব্যবহার করে ইন্টারনেটে আইএস এর নামে প্রচার চালানোর অভিযোগে ঢাকায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Nov 2015, 04:50 AM
Updated : 26 Nov 2015, 02:37 AM

ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) মুনতাসিরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মঙ্গলবার রাতে ঢাকার বাড্ডা থেকে নাহিদ হোসেন নামের ওই তরুণকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

বুধবার পুলিশের গণমাধ্যম কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নাহিদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘উসকানিমূলক বক্তব্য’ প্রচারের কথা ‘স্বীকার করেছে’।

“ইসলামিক স্টেট-দাওলা আল ইসলামিয়া নামের একটি পেইজ চালাতেন তিনি। সেখানে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকারের পাশাপাশি আইএসের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অবহিত করা হতো।”

গ্রেপ্তার নাহিদ ফেইসবুকে ‘খালিদ বিন ওয়ালিদ’ ও ‘জিহাদী জন’ নাম ব্যবহার করতেন এবং ‘আর্মি ক্যাপ্টেন অব খিলাফত’ নামে নিজের পরিচয় দিতেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

মনিরুল জানান, নাহিদ এর আগে ‘শিয়া কাফের’ নামে একটি ফেইসবুক পেজের অ্যাডমিন ছিলেন, যেখানে শিয়া সম্প্রদায় সম্পর্কে বিভিন্ন উসকানিমূলক বক্তব্য প্রচার করা হতো।

“তিনি নিজে ধর্ম পালন করেন না। তার সঙ্গে থাকা মোবাইল জব্দ করে বেশ কিছু অশ্লীল ভিডিও পেয়েছেন গোয়েন্দারা।”

নাহিদ দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করাসহ অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য ‘নানা ধরনের পরিকল্পনা’ নিয়েছিলেন বলেও  জানান মনিরুল।

পরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে আইএসের কোনো সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড অথবা স্বীকৃত কোনো সদস্য নেই। নিষিদ্ধ ঘোষিত কিছু জঙ্গি সংগঠনের কর্মীরা বিচ্ছিন্নভাবে তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে চায়।

“নিষিদ্ধ ঘোষিত আনসারউল্লাহ বাংলা টিম (এবিটি) দ্বিধাবিভক্ত, হরকাতুল জিহাদের নেতারা কারাগারে রয়েছেন। অন্য জঙ্গি সংগঠনের কর্মীরাও তেমন অ্যাকটিভ না”, বলেন মনিরুল।  

কুয়েতি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ জঙ্গি জিহাদি জনের প্রকৃত নাম মোহাম্মেদ ইমওয়াজি। আইএসের বিভিন্ন ভিডিওতে তাকে ছুরি হাতে পশ্চিমা বন্দিদের শিরশ্ছেদে হত্যা করতে দেখা যায়। এরপর তাকে ধরার জন্য বিশ্বব্যাপী অভিযান শুরু হয়।

সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় শহর রাকায় চলতি মাসের মাঝামাঝি এমনই এক অভিযানে ‘জিহাদি জন’ নিহত হন বলে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস এর তথ্য।

বাংলাদেশে আইএস- এর তৎপরতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হলেও বিভিন্ন সময়ে সন্দেহভাজন জঙ্গিদের গ্রেপ্তার করে তাদের আইএস সংশ্লিষ্টতার কথা বলা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকেই।

বাংলাদেশে মধ্যপ্রাচ্যের এই জঙ্গি সংগঠনের কথিত সমন্বয়ক সাখাওয়াতুল কবিরসহ চার সদস্যের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় মঙ্গলবার ঢাকার আদালতে অভিযোগ গঠনও হয়েছে।

আইএস এর জঙ্গিরা বাংলাদেশে একজন ‘আঞ্চলিক নেতার অধীনে’ নতুন হামলার জন্য সংগঠিত হচ্ছে বলে দাবি করা হয়েছে উগ্রপন্থি এই দলের মাসিক পত্রিকা ‘দাবিক’ এর সর্বশেষ সংখ্যায়।

তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল মঙ্গলবারও সাংবাদিকদের বলেছেন, “আমি খুব জোর গলায় বলব, আমাদের দেশে সাংগঠনিকভাবে আইএস ধরনের কোনো কিছুর অস্তিত্ব নেই।

“এখানে কিছু কিছু জঙ্গি মাথাচাড়া দিয়ে উঠত- জেএমবি নামে, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম নামে, নানান নামে। এখন আর সেই ধরনের সাংগঠনিক কায়দায় কিংবা সে ধরনের নেই কেউ। সবাইকে ধরেছি। আনসারুল্লাহ বাংলা টিম বলেন, জেএমবি বলেন। তাদের কর্মকাণ্ড আমরা নিয়ন্ত্রণ করেছি।”