পৌর নির্বাচন: পোস্টার, বিলবোর্ড সরাতে দুই দিন সময়

পৌর নির্বাচনকে সামনে রেখে আগাম প্রচারণামূলক পোস্টার, বিলবোর্ড সরিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি দেয়াল লিখন মুছে ফেলতে বলেছে নির্বাচন কমিশন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Nov 2015, 03:04 PM
Updated : 24 Nov 2015, 03:04 PM

মঙ্গলবার পৌর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাকালে সম্ভাব্য প্রার্থী ও সমর্থকদের উদ্দেশ্যে এ নির্দেশনা দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ।

ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী, দেশের ২৩৪ পৌরসভায় ৩০ ডিসেম্বর ভোট হবে; ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

১৩ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময়সীমা পার হলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা প্রতীক নিয়ে প্রচারণায় যেতে পারবেন। এর আগে প্রচারের কোনো সুযোগ নেই।

সিইসি জানান, ভোটকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা নানা ধরনের প্রচারণায় নেমেছে; পোস্টার-বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে অনেক এলাকা।

“আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে (বৃহস্পতিবার) এসব প্রচারসামগ্রী সরিয়ে ফেলতে হবে প্রার্থী ও তার সমর্থকদের; তা না হলে আচরণবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে আমাদের।”

বিধি লঙ্ঘনে জেল-জরিমানা ও সর্বোচ্চ প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা রয়েছে ইসির।

‘সরকারি সুবিধাভোগীরা প্রচারে নয়’

সিইসি জানান, পৌর নির্বাচনে সরকারি সুবিধাভোগী গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও সরকারি চাকুরেদের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় অংশ নেওয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

“প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, মন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেতা, উপনেতা, প্রতিমন্ত্রীসহ সমমর্যাদার ব্যক্তি, সংসদ সদস্য ও সিটি মেয়ররা প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না।”

মেয়র দলীয়, কাউন্সিলরে নির্দলীয় ভোট

দলীয় পৌর নির্বাচন হওয়ায় সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ।

তিনি বলেন, “দলীয়ভাবে নির্বাচন হলেও সব প্রার্থীর জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা হবে। সে জন্যই নতুন করে নির্বাচনী আচরণবিধি তৈরি করা হয়েছে। আশা করছি, সব দল নির্বাচনে অংশ নেবে।”

সবাইকে আচরণবিধি অনুসরণের অনুরোধ জানান সিইসি।

এবারই দলীয়ভাবে প্রথমবারের মতো স্থানীয় সরকারে পৌর নির্বাচন হচ্ছে। এতে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়নের সুযোগ রয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে লাগবে ১শ ভোটারের সমর্থন।

তবে সাবেক মেয়রদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে সমর্থনসূচক তালিকা লাগবে না। এছাড়া কাউন্সিলর পদে হবে নির্দলীয় ভোট।

এক প্রশ্নের জবাবে কাজী রকিব বলেন, “আমরা সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ। বিএনপি আগেও যখন অভিযোগ দিয়েছে, সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছি। গণমাধ্যমের সংবাদ ও নিজস্ব মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে আমরা সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশন নেব।”

‘সাংবাদিকদের বাধা নয়’

ঢাকায় সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাংবাদিকদের সঙ্গে অপ্রীতিকর ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে সিইসি জানান, সাংবাদিকরা ভালোভাবে নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহ করবে। কেন্দ্রের অবস্থা বিবেচনা করে সাংবাদিকরা দল ভাগ করে কাজ করবে।

“পুলিশ এবার কোনো বাধা দেবে না। আশা করি সাংবাদিকরাও প্রপার আইডেন্টিটি কার্ড বহন করবেন, যাতে কোনো অসুবিধা না হয়।”

‘তাড়াহুড়ায় অসুবিধা হবে না’

দলীয় ও নির্দলীয় মিশ্রনে পৌর নির্বাচন করতে কোনো অসুবিধা হবে না বলে মনে করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ।

সিইসি বলেন, “দলীয়ভাবে পৌর নির্বাচন হবে। তবে এ আইন যে হচ্ছে আমরা তা জানতাম না; খবরের কাগজ পড়ে জানলাম। আইন পাস হওয়ার পর কী রয়েছে তা দেখলাম। আমাদের তো অনেক কাজ। তাড়াহুড়া করে কাজ করেছি। হাতে সময় নেই।”

ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষাকে সামনে রেখে জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত পৌর ভোট করার কোনো সুযোগ নেই বলেও জানান তিনি।

“ডিসেম্বর ভোট করতেই হবে। এখন পৌর নির্বাচন করতে না পারলে আগামী কয়েক মাসও পারব না। জুনে ইউনিয়ন পরিষদের ভোটের সময় হবে।”

হাতে সময় কম থাকায় নতুন আচরণবিধি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা সম্ভব হয়নি বলে জানান রকিব।