নিজামীর আপিল শুনানি অব্যাহত

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজমীর করা আপিল শুনানিতে পেপারবুক থেকে সাক্ষ্য উপস্থাপন অব্যাহত রেখেছে আসামিপক্ষ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Nov 2015, 09:29 AM
Updated : 30 Nov 2015, 05:30 AM

প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ মঙ্গলবার সকাল সোয়া ৯টা থেকে দুপুর সোয়া ১টা পর্যন্ত এ মামলা শুনে বুধবার পর্যন্ত মুতলবি করে।

বেঞ্চের অপর তিন সদস্য হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আসা এটি ষষ্ঠ মামলা, যার ওপর শুনানি চলছে।

গত ১৯ নভেম্বর একই বেঞ্চে এ মামলার তৃতীয় দিনের শুনানি হয়। এর ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সকালে শুরু হয় পঞ্চম দিনের শুনানি।

এদিন নিজামীর পক্ষে তার আইনজীবী এস এম শাজাহান পেপারবুক থেকে সপ্তম ও ষোড়শ অভিযোগ ধরে সাক্ষ্য উপস্থাপন করেন। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী শিশির মনির।

শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মমতাজ উদ্দিন ফকির ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খোন্দকার দিলীরুজ্জামান।

পরে এস এম শাজাহান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সপ্তম ও ষোড়শ অভিযোগের সমর্থনে সাক্ষীদের দেওয়া জবানবন্দি পেপারবুক থেকে উপস্থাপন শেষ করেছি। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার জবানবন্দি উপস্থাপন শুরু করেছি। বুধবার আবার শুনানি হওয়ার কথা।” 

বুদ্ধিজীবী গণহত্যা, হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, সম্পত্তি ধ্বংস, দেশত্যাগে বাধ্য করা, আটক, নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ষড়যন্ত্র ও সংঘটনে সহযোগিতার দায়ে হওয়ায় গত ২৯ অক্টোবর নিজামীকে মৃত্যুদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল।

জামায়াতে ইসলামীর আমির নিজামী একাত্তরে ছিলেন দলটির ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের নাজিমে আলা বা সভাপতি এবং সেই সূত্রে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতার জন্য গঠিত আল বদর বাহিনীর প্রধান।

স্বাধীনতাকামী বাঙলির ওপর দমন-পীড়ন চালাতে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতার জন্য গঠিত রাজাকার বাহিনী ও শান্তি কমিটিতেও তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বলে ট্রাইব্যুনালের রায়ে উঠে এসেছে।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে গত ২৩ নভেম্বর সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করেন নিজামী। ছয় হাজার ২৫২ পৃষ্ঠার নথিপত্রসহ নিজামীর করা আপিলে ১৬৮টি যুক্তি তুলে ধরে সাজার আদেশ বাতিল করে খালাস চাওয়া হয়। সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়ায় রাষ্ট্রপক্ষ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেনি।

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আশা করছেন, ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে সুপ্রিম কোর্টে অবকাশের আগেই এ শুনানি শেষ হবে।