উত্তরায় জাপানি নারীর মৃত্যু নিয়ে ‘রহস্য’, তদন্তে পুলিশ

রাজধানীর উত্তরায় জাপানি এক নারীর মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে মাঠে নেমেছে পুলিশ, এ ঘটনায় ছয়জনকে আসামি করে একটি মামলাও হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Nov 2015, 08:06 AM
Updated : 25 Nov 2015, 07:22 AM

হিরোয়ি মিয়েতা নামের ষাটোর্ধ্ব ওই নারী প্রায় দশ বছর ধরে ‘অবৈধভাবে’ বাংলাদেশে বসবাস করছিলেন। তিনি এ দেশে বায়িং হাউজের ব্যবসায় জড়িত ছিলেন বলে পুলিশের তথ্য। 

গত ১৯ নভেম্বর জাপান দূতাবাসের এক কর্মকর্তা উত্তরা পূর্ব থানায় একটি জিডি করেন, যাতে বলা হয়, হিরোয়ি মিয়েতা তিন সপ্তাহ ধরে নিখোঁজ। এরপর পুলিশ জানতে পারে, ২৯ অক্টোবর মিয়েতার মৃত্যুর পর তাকে গোপনে উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরে সিটি করপোরেশনের কবরস্থানে সমাহিত করা হয়েছে।

তার মৃত্যু ও গোপনে সমাহিত করায় বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ দেখা দেওয়ায় তদন্ত শুরু করে পুলিশ। এরপর উত্তরা পূর্ব থানায় ছয়জনকে আসামি পুলিশের পক্ষ থেকে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয় বলে ওসি আবু বকর জানান।

এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে বলে পুলিশের উত্তরা বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।  

গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরের ১৩/বি নম্বর সড়কের ৮ নম্বর হোল্ডিংয়ে ‘সিটি হোমস’ নামের একটি হোটেলে একাই থাকতেন হিরোয়ি মিয়েতা। জাপানে তিনি মায়ের সঙ্গে মাঝে মাঝে টেলিফোনে কথাও বলতেন। গত ২৬ অক্টোবর মায়ের সঙ্গে তার শেষ কথা হয়। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।

প্রায় ১০ বছর ধরে ঢাকায় থাকা এই জাপানি নারীর সঙ্গে অনেকের ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল। তিনি জাপান সরকারের পেনশনও পেতেন বলেও একটি সংবাদপত্রের খবরে বলা হয়েছে।

পুলিশের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ২০০৬ সালে ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে সিটি হোমসেই থাকছিলেন তিনি। হোটেলে অনেক টাকা বিল জমে যাওয়ায় আড়াই মাস আগে বন্ধুরা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাসায় মিয়েতার থাকার ব্যবস্থা করে দেন। সেখানেই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ২৯ অক্টোবর হিরোয়ি মিয়েতার মৃত্যু হয়।

ওই নারীর বাংলাদেশি বন্ধুরা পুলিশকে বলেছেন, অবৈধভাবে বাংলাদেশে থাকছিলেন বলে তাকে কোনো হাসপাতালে নেওয়া হয়নি। তবে মৃত্যুর বিষয়টি জাপানে তার মাকে জানানো হয়।

মামলার তদন্তে থাকা এক পুলিশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওই নারীর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে, নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে, তা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।”

মৃত্যু ও তাকে সমাহিত করার বিষয়টি কেন গোপন করা হল, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে জানাতে সোমবার পুলিশের গণমাধ্যম কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন ডাকা হলেও পরে ‘অনিবার্য কারণে’ তা বাতিল করার কথা জানানো হয়।