সোমবার শাহবাগে এক সমাবেশে বক্তব্যে তিনি যুদ্ধাপরাধী আলী আহসান মো. মুজাহিদের পক্ষে হস্তক্ষেপমূলক বিবৃতির জন্য পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সংসদে নিন্দা প্রস্তাব নেওয়ার দাবিও জানান।
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের দায়ে রোববার প্রথম প্রহরে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মৃতুদণ্ড কার্যকর করার পর ওই দিনই এক বিবৃতিতে এই বিচারকে ‘ত্রুটিপূর্ণ’ আখ্যায়িত করে উদ্বেগের কথা জানায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
পাশাপাশি তাদের দণ্ড কার্যকরের ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে মন্তব্য এসেছে একই বিবৃতিতে।
যুদ্ধাপরাধের দায়ে ২০১৩ সালে জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পরও উদ্বেগ জানিয়েছিল পাকিস্তান।
‘পাকিস্তানের প্রতি অনুগত এবং ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে সমর্থন করায়’ তাকে ফাঁসি দেওয়া হয় দাবি করে সে সময় দেশটির পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাবও গৃহীত হয়।
ওই সময় সরকার পাকিস্তানের হাইকমিশনারকে তলব করে এর ‘কড়া প্রতিবাদ’ জানায়। আর পাকিস্তান দূতাবাস ঘেরাওয়ের কর্মসূচি দেয় যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে গড়ে ওঠা গণজাগরণ মঞ্চ।
দুই যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর পাকিস্তানের দেওয়া বিবৃতির প্রতিবাদ জানিয়ে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার বলেছেন, ‘দালালদের’ রক্ষা করতে তারা উঠেপড়ে লেগেছে।
সমাবেশে ইমরান বলেন, “যুদ্ধাপরাধীদের রায় কার্যকর হলেই পাকিস্তানের বক্তব্য-বিবৃতি থেকে বোঝা যায়, এই যুদ্ধাপরাধীরা মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে আজীবন পাকিস্তানের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করে গেছে।”
“যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে নাক গলানো বন্ধ না হলে কাদের মোল্লার রায়ের পর যেভাবে মানুষ পাকিস্তানের বক্তব্যের প্রতিবাদে দূতাবাস ঘেরাওয়ে রাজপথে নেমে এসেছিল, সেভাবে প্রয়োজনে আবারও বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তানের ধৃষ্টতার জবাব দেবে।”
মুজাহিদকে নিয়ে বিবৃতির জন্য পাকিস্তানের হাই কমিশনারকে তলব করে ‘কড়া প্রতিবাদ’ জানিয়েছে সরকার।
যুদ্ধাপরাধী মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রতিবাদে তার দল জামায়াতে ইসলামীর ডাকা হরতাল প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ মিছিল ও সোমবার এই সমাবেশের ডাক দেয় গণজাগরণ মঞ্চ।
মঞ্চের নেতাকর্মীরা হরতাল প্রত্যাখ্যান করে সোমবার সকাল ১০টা থেকে শাহবাগে অবস্থান নেয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেখান থেকে বের করা হয় হরতালবিরোধী মিছিল। মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ঘুরে পুনরায় শাহবাগে এসে শেষ হয়।
সমাবেশে মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান বলেন, “জামায়াতের ডাকা হরতাল প্রতিহতের দায়িত্ব সাধারণ জনগণ নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে। দেশের সর্বস্তরের মানুষ যার যার কাজে যোগ দিয়ে, রাস্তায় বের হয়ে হরতাল প্রত্যাখ্যান করেছে।”
জনগণের স্বতঃস্ফূর্ততায় হরতাল প্রতিহত করতে কোনো সংগঠিত শক্তির প্রয়োজন পড়েনি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
যুদ্ধাপরাধী সাকা ও মুজাহিদের সন্তানদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যের জবাবে ইমরান বলেন, “রাজাকারদের আস্ফালনের উপযুক্ত জবাব বাংলাদেশের মানুষ দিয়েছে। রাজাকারের সন্তানদের এই ঔদ্ধত্যের জবাবও সময়মত দেওয়া হবে।”