চট্টগ্রামে রেলের দরপত্র নিয়ে জোড়া খুনের অভিযোগপত্র

চট্টগ্রামে রেলের ৪৮ লাখ টাকার কাজ পাওয়া নিয়ে যুব ও ছাত্রলীগ সমর্থকদের গোলাগুলিতে শিশুসহ দুজন নিহতের ঘটনায় প্রায় আড়াই বছর পর অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Nov 2015, 01:01 PM
Updated : 26 Nov 2015, 08:50 AM

এতে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-অর্থ বিষয়ক সম্পাদক হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর এবং ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা সাইফুল ইসলাম লিমনসহ ৬২ জনকে আসামি করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

২০১৩ সালের ২৪ জুন সিআরবি সাত রাস্তার মোড়ে রেলের পূর্বাঞ্চলীয় সদর দপ্তরের সামনে দরপত্র জমা দেওয়ার সময় সংঘর্ষে জড়ায় বাবর ও লিমনের অনুসারীরা।

সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান বাবরের অনুসারী হিসেবে পরিচিত যুবলীগকর্মী সাজু পালিত এবং ওই এলাকার শিশু আরমান হোসেন টুটুল (৮)।

ঘটনার পর পুলিশ একটি মামলা করে, আরেকটি মামলা করেন সাজুর মা। পরে আদালত দুটি মামলার তদন্ত একসঙ্গে করার নির্দেশ দেয়।

দুই দফা তদন্ত কর্মকর্তা বদলের পর সেই তদন্ত শেষ করে গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আতিক আহমেদ চৌধুরী সোমবার চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

এই দুই মামলার তৃতীয় তদন্ত কর্মকর্তা আতিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দুটি মামলা হলেও আদালত একসাথে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সে অনুযায়ী অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।”

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী মুত্তাকি ইবনু মিনান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অভিযোগপত্রে বাবর ও লিমনসহ ৬২ জনকে আসামি করা হয়েছে।

অভিযোগপত্রে দেখা যায়, আসামির তালিকায় এক নম্বরে রয়েছে লিমনের নাম। বাবরের নাম ৩৪ নম্বরে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি আলমগীর টিপুর নাম রয়েছে অভিযোগপত্রের সাত নম্বরে। তিনি লিমনের অনুসারী হিসেবে ঘটনার দিন গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।

ঘটনার পর গ্রেপ্তার যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর (ফাইল ছবি)

ঘটনার পর গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতা সাইফুল আলম লিমন (ফাইল ছবি)

৮৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হলেও তদন্ত শেষে তার মধ্যে ৬১ জনের নাম অভিযোগপত্রে রয়েছে। একজনকে তদন্ত সাপেক্ষে আসামি করা হয়েছে।

বাকি ২৬ জনকে মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা কাজী মুত্তাকি।  

মামলায় ৩৭ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে বলেও জানান তদন্ত কর্মকর্তা আতিক।

ঘটনার দিন কোতোয়ালি থানার এসআই মহিবুর রহমান বাদী হয়ে বাবর, লিমনসহ দুই পক্ষের ৮৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন।

এর প্রায় একমাস পরে যুবলীগকর্মী সাজু পালিতের মা মিনতি পালিত বাদী হয়ে যুবলীগকর্মী অজিত বিশ্বাসকে প্রধান আসামি করে চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা মামলা করেন।

মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন কোতোয়ালি থানার এসআই মো. কামরুজ্জামান। এবছরের প্রথমদিকে তদন্তভার আসে গোয়েন্দা পুলিশের উপর।

গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক জাহিদুল ইসলাম তদন্ত শুরুর পর পদোন্নতি পেলে তার কাছ থেকে এই মামলা নেন আতিক চৌধুরী।