গণজাগরণ কর্মীদের আনন্দ মিছিল

যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকরের পর জাতীয় পতাকা নিয়ে মিছিল করেছেন গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Nov 2015, 03:38 PM
Updated : 22 Nov 2015, 04:37 PM

রোববার বিকালে শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে তাদের মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকা ঘুরে শাহবাগে ফিরে আসে।

‘কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত হওয়ায় শহীদ বুদ্ধিজীবীসহ ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তস্নাত বাংলার মাটি আজ কলঙ্কমুক্তির পথে অগ্রসর/রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে’ স্লোগান লেখা ব্যানার নিয়ে মিছিলে যান জাগরণ মঞ্জের কর্মীরা।

মিছিলের আগে সমাবেশে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার বলেন, “এই রায় বাংলাদেশের জন্য বিরাট এক পাওয়া, বাংলাদেশের মর্যাদার জন্য বড়ো পাওয়া। কেননা যুদ্ধাপরাধের বিচার করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে যে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হল, বাংলাদেশ যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করল তা সারা পৃথিবীর কাছে অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।”

প্রতিহিংসা থেকে নয়, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠান জন্যই দুই যুদ্ধাপরাধীর দণ্ড কার্যকর করা হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “এই বিচারকে কেউ যদি মনে করেন, আমাদের শুধু ত্রিশ লক্ষ মানুষকে হত্যা করেছে এবং তার পরর্বতী প্রজন্ম প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে বিচার করছে- তাহলে এটি মারাত্মক ভুল করবে।

“সমাজে আইন শাসন প্রতিষ্ঠা এবং অপরাধীদের শাস্তি দেওয়ার জন্য, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করার জন্য এই বিচার করা হয়েছে। এই বিচার ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।”

যুদ্ধাপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসা গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র বলেন, “এই দুই যুদ্ধাপরাধী একাত্তরে গণহত্যা চালিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে। পাশাপাশি স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে তারা স্বাধীনতাবিরোধী যে চেতনা, যে অপদর্শন যাকে আমরা পাকিস্তানি দর্শন বলছি- সেই পাকিস্তানি অপদর্শন ধারণ করে পুনরায় একটি মধ্যযুগীয় শাসন করার ষড়যন্ত্র করেছে। তারা চেয়েছে এই দেশকে আবারও একটা নব্য পাকিস্তানে পরিণত করতে।”

যুদ্ধাপরাধের বিচারের ইতিবাচক দিকগুলো নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ইমরান বলেন, “এই বিচারের মধ্য দিয়ে অনেক প্রাপ্তি হবে। কেননা আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দেখাতে পারব- এই জাতির সঙ্গে বেঈমানী করে, এই জাতির সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে, এই জাতির বীর সন্তানদের হত্যা করে কেউ রেহাই পায় না। তাদের দেখাতে পারব- কোনো অপরাধ করে কেউ, তা সে যতই ক্ষমতাধারী হোক না কেন, আইনের হাত থেকে রেহাই পায় না।”

তিনি বলেন, “এই বিচারের মধ্য দিয়ে যে শক্তি অর্জন করলাম, সেই শক্তি আমাদের আগামী দিনে বাংলাদেশ গড়ার জন্য, মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ গড়ার জন্য একটা বড় প্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।”

মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “স্বাধীনতাবিরোধীদের যে মূল সংগঠন জামায়াতে ইসলামী, তাদের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে, তাদের আর্থিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান বাজেয়াপ্ত করতে হবে।”