পাখির গ্রাম নকুলহাটি

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের ছোট্ট গ্রাম নকুলহাটি। পাশেই শীত বিল। এই বিলের পাশের তিনটি তেঁতুল গাছে দুই বছর ধরে বাসা বাঁধছে কয়েকশ সাদা বক আর কালো রঙের লম্বা গলার পানকৌড়ি।

ফরিদপুর প্রতিনিধিমফিজুর রহমান শিপন, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Nov 2015, 06:00 AM
Updated : 2 Nov 2015, 06:00 AM

নকুলহাটি গ্রামটি আশেপাশের গ্রামবাসীর কাছে পাখির গ্রাম পরিচিতি পাচ্ছে।

আটঘর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ মিয়া জানান, প্রতি বছর মে মাসের দিকে পাখিগুলো ওই গাছের ডালে আশ্রয় নেয়। এখানেই ডিম পাড়ে। বাচ্চা ফোটায়।

তিনি বলেন, “কোনো পাখি শিকারিকে এখানে আসতে দেওয়া হয় না।”

সরেজমিনে দেখা যায়, মা পাখি খাবার তুলে দিচ্ছে ছানাগুলোর মুখে। কোনোটি উড়ছে। আবার কোনোটি গাছের ডালে বসে ডাকছে।

প্রায় সারাদিন মা আর ছানা পাখির কলকাকলিতে মুখর হয়ে থাকে নকুলহাটি গ্রামের ওই এলাকা।

ওই গ্রামের আরমান মাতুব্বর জানান, গত বছর থেকে সাদা বকের সাথে কালো রঙের পানকৌড়ি আসা শুরু করে। এর আগে এক বছর শুধু কয়েকটি সাদা বক বাসা বেঁধেছিল ওই তিনটি তেঁতুল গাছে।

তিনি বলেন, তেঁতুল গাছ তিনটির মধ্যে দুটি আটঘর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ মিয়ার এবং অপর গাছটি তার ভাতিজা আব্দুর রব মাতুব্বরের।

ওই গ্রামের বাসিন্দা ও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ মিয়ার প্রতিবেশী আব্দুল কুদ্দুস এই গ্রামে (৬০) এর আগে কখনও একসঙ্গে এত পাখি দেখেননি।

ভোর থেকে দিনভর শীতবিলসহ আশেপাশের ধানক্ষেতে খাবার সংগ্রহ করে পাখিগুলো। আর কিছুক্ষণ পরপর এসে ছানাগুলোর মুখে খাবার তুলে দেয়। সন্ধ্যা নামার আগেই পাখিরা গাছের ডালে ফিরে আসে।

ওই গ্রামের আলমগীর মাতুব্বর জানান, এখানে পাখি দেখতে প্রতিদিনই বহু লোক আসে। পাখির বাসার জন্য নকুলহাটি গ্রামটি আশেপাশের গ্রামে পাখির গ্রাম বলে পরিচিত হচ্ছে।

স্থানীয় সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম ফারুক বলেন, ‘আমরা এলাকাবাসী পাখিদের মায়ার বাঁধনে জড়িয়ে পড়েছি। হয়তো একটা সময় ওরা এখান থেকে চলে যাবে। তখন খুব খারাপ লাগবে।”