রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “(আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি) অবশ্যই ভালো, অবশ্যই ভালো। এগুলো (খুন) উদ্দেশ্যমূলকভাবে হচ্ছে, আমি আগেও বলেছি।”
মুক্তমনা লেখক-ব্লগারদের হত্যার ধারাবাহিকতায় শনিবার দুই প্রকাশনা সংস্থার কার্যালয়ে ঢুকে এক প্রকাশককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়; মারাত্মক আহত হন আরেক প্রকাশকসহ তিনজন।
প্রকাশকদের উপর হামলার ঘটনার তদন্তে ও হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে কোনো অগ্রগতি জানাতে পারেননি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এর আগে গত অগাস্ট পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ধারাবাহিক দুই সরকারের আমলে প্রায় আড়াই বছরে লেখক-ব্লগার ও গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠকসহ ছয়জনকে চাপাতিসহ ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে ‘মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তির হাত’ রয়েছে ঈঙ্গিত করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “যা আনসারুল্লাহ বাংলা টিম, সেটাই জেএমবি, সেটাই হরকাতুল জিহাদ। সবই এক সুতোয় গাঁথা, সবই স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি।
“সবই পূর্বাবস্থার জামায়াত-শিবির, বর্তমানে তারা নতুন কায়দায় অন্য কিছুর মাধ্যমে ধ্বংসাত্মক প্রচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।”
এ বছর ২৬ ফেব্রুয়ারি বইমেলা থেকে ফেরার পথে টিএসসি এলাকায় মুক্তমনা লেখক-ব্লগার অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এর দশ মাস পর শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে আজিজ সুপার মার্কেটে অভিজিতের বন্ধু ও তার বইয়ের প্রকাশক জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্ত্বাধিকারী ফয়সল আরেফিন দীপনকে হত্যা করা হয় একই কায়দায়।
কাছাকাছি সময়ে লালমাটিয়ায় অভিজিতের বইয়ের আরেক প্রকাশক শুদ্ধস্বরের কর্ণধার আহমেদুর রশীদ চৌধুরী টুটুলসহ তিনজনকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়।
এর আগেও গত দুই বছরে অন্তত পাঁচ ব্লগারকে একই কায়দায় বেপরোয়াভাবে হত্যা করা হয়।
শনিবারের দুই ঘটনায় দায় স্বীকার করা হয়েছে আনসার আল ইসলাম নামের একটি টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে বার্তা পাঠিয়ে, যারা নিজেদের আল কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশ শাখা (একিউআইএস) দাবি করেছে।
মন্ত্রী দাবি করেন, প্রকাশক হত্যার ঘটনাস্থল আজিজ মার্কেট শনিবার বন্ধ ছিল এবং খুনীরা সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েছে।
তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, আজিজ মার্কেটের সাপ্তাহিক ছুটি মঙ্গলবার। শনিবার ঘটনার সময় মার্কেট খোলাই ছিল।
মন্ত্রী বলেন, “লালমাটিয়াতেও একই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। তবে সেখানে আইউইটনেস ছিল। এটার অগ্রগতি দ্রুত হবে।”
সাম্প্রতিক অন্য হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, “সন্দেহভাজনদের আমরা শনাক্ত করেছি, ধরেছি। বাকিদের ধরার চেষ্টা করছি।”
সম্প্রতি ঢাকায় ইতালির নাগরিক চেজারে তাভেল্লা ও রংপুরে জাপানের নাগরিক কুনিও হোশিকে গুলি হত্যা করে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা।
নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার মালিকদের নিজ উদ্যোগে সিসি ক্যামেরা (ক্লোজ সার্কিট) স্থাপনের আহ্বান জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।