সোমবার এই ঘটনা ঘটলেও মঙ্গলবার তা প্রকাশ পায়। ওই ঘটনায় কোনো মামলাও হয়নি, পুলিশ ওই কিশোরকে আটক করলেও পরে ছেড়ে দেয়।
সাবেক সংসদ সদস্যের ভাতিজার নির্দোষ বলে সাফাই গেয়ে গুলশান থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওই ছেলে গাড়ি চালানোর সময় হঠাৎ করেই একজন পথচারী সামনে পড়ে। তাকে বাঁচাতে গিয়েই এই দুর্ঘটনা ঘটে।
“আহতদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা তারাই করেছে। গাড়িটি আটক রাখা হয়েছে, আর ওই ছেলেকে তার বাবার হেফাজতে দেওয়া হয়েছে।”
ওই কিশোরের বাবা এইচ বি এম জাহিদুর রহমান একজন ব্যবসায়ী। তার ভাই ইকবাল ১৯৯৬ সালে ঢাকার রমনা-তেজগাঁও আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে ২০০১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি বিএনপির হরতালের মিছিলে গুলি চালানোর ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে পড়েন ইকবাল।
ওই মিছিলে গুলির মামলায় বিএনপি আমলে দেওয়া অভিযোগপত্রে ইকবালকে আসামি করা হলেও ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়ার পর ‘রাজনৈতিক হয়রানিমূলক’ বিবেচনায় মামলাটি প্রত্যাহার করা হয়।
ইকবালের ১৬ বছর বয়সী ভাতিজার গাড়ির ধাক্কায় আহতদের মধ্যে রফিক (২৭) একজনকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়াই সোমবার বিকালে রাজধানীর অভিজাত এলাকায় গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছিলেন ওই কিশোর। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী লাইসেন্স পেতে ১৮ বছর বয়স হতে হয়।
গুলশান থানার এক এসআই নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওই ছেলে মদ্যপ অবস্থায় ছিল। গুলশানের ৭৪ নম্বর সড়ক দিয়ে বেপরোয়া চালানোর সময় দুটি রিকশাকে ধাক্কা দেয়। এতে দুই রিকশাচালকসহ চারজন আহত হয়।”
আহতদের একজনের জখম গুরুতর হওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বলে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান। অন্যরা চিকিৎসা নিয়ে চলে যায়।
ওই এসআই বলেন, “চলন্ত অবস্থায় মোবাইলে ছবি তুলে ফেইসবুকে দেওয়ার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে বলে ওই ছেলে আমাদের বলেছে।”
এই ঘটনায় মামলা না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে গুলশানের ওসি সিরাজুল বলেন, “যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেলে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
“তবে এসব ঘটনায় কেউ যদি মারাও যায়, তবুও আসামি জামিন পেয়ে থাকেন,” গ্রেপ্তার না করার ক্ষেত্রে আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।
এই বিষয়ে কথা বলতে এইচ বি এম ইকবালের সঙ্গে কথা বলতে তার মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।