এরা হলেন- ব্র্যাক ব্যাংক রাজশাহী মহানগরীর আলুপট্টি শাখার সেলস অ্যান্ড সার্ভিস অফিসার সুলতান নাহিদ ও ক্রেডিট কার্ড অফিসার এইচ এম শাহরিয়ার আলম।
রংপুরের পুলিশ সুপার আব্দুর রাজ্জাক জানান, এই দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শনিবার বেলা দেড়টার দিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এদের কাছ থেকে জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি; তাই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”
কুনিও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এই দুজনকে রাজশাহী থেকে আটক করে শুক্রবার সকালে রংপুরে নিয়ে যায় পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রংপুরের কাউনিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মামুনুর রশীদ মামুন জানান, গ্রেপ্তার নাহিদ এ হত্যা মামলার আসামি হুমায়ুন কবীর হীরার খালাতো ভাই। আর শাহরিয়ার হলেন নাহিদের বন্ধু। তারা দুজনেই রাজশাহীর সাগরপাড়ায় থাকেন।
১০ দিনের রিমান্ডে থাকা হীরার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই দুজনকে আটক করা হয় বলে জানান তিনি।
ব্র্যাক ব্যাংকের রাজশাহী শাখার এক কর্মকর্তা জানান, নাহিদের বাড়ি নাটোরের লালপুরে এবং শাহরিয়ারের বাড়ি ওই জেলার গুরুদাসপুর উপজেলায়।
এদিকে কুনিও হোশি হত্যামামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতে থাকা বিএনপি নেতা রাসেদ উন নবী খান বিপ্লবের রিমান্ড বাতিল করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার চতুর্থ দিনের মাথায় তাকে রংপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে হাজির করে পুলিশ রিমান্ড বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করে।
শুনানি শেষে বিচারক আবু তালেব আবেদন মঞ্জুর করে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
তদন্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ মামুন বলেন, এর মধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডসংশ্লিষ্ট তথ্য পাওয়ায় বিপ্লবের রিমান্ড বাতিলের আবেদন করা হয়।
গত ৩ অক্টোবার কুনিও হত্যার পরপরই রংপুর মহানগর বিএনপির সদস্য বিপ্লবকে আটক করা হয়। ৬ অক্টোবর তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।
ঢাকায় ইতালীয় নাগরিক খুনের পাঁচ দিনের মাথায় গত ৩ অক্টোবর রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার আলুটারি গ্রামে জাপানি নাগরিক কুনিও হোশিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তিনজন মুখোশধারী তাকে গুলি করে মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায় বলে পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্য।
আইএস এই হত্যার দায় স্বীকার করেছে বলে জঙ্গি হুমকি পর্যবেক্ষণকারী ওয়েবসাইট ‘সাইট ইন্টিলিজেন্স গ্রুপ’ জানালেও সরকারের দাবি, এর কোনো ‘ভিত্তি’ পাওয়া যায়নি।
নগরীর মুন্সিপাড়ায় জাকারিয়া বালার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন কুনিও। তিনি খুন হওয়ার পরপরই পুলিশ জাকারিয়া বালা, তার শ্যালক হীরা, স্থানীয় রিকশাচালক মোন্নাফ আলী, যে বাড়ির সামনে ওই জাপানি নিহত হন, সেই বাড়িওয়ালার ছেলে মুরাদ হোসেন, রংপুর মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আনিছুর রহমান লাকু ও সদস্য বিপ্লবকে আটক করে পুলিশ।
পরে কাউনিয়া থানার ওসি রেজাউল করিমের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় বিপ্লব ও হীরাকে। বাকিদের এখনও ‘জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে’ বলে জানালেও তাদের মামলায় আসামি করা হবে কি না- সে বিষয়ে কিছু বলছেন না পুলিশ কর্মকর্তারা।
কুনিও হোশির মরদেহ এখনও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে। তাকে রংপুরে সমাহিত করা সম্ভব কি না তা জানতে চেয়ে জাপান দূতাবাস সিটি করপোরেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও এখন পর্যন্ত সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ।