পৌর নির্বাচনও একদিনে করার ইঙ্গিত

এবার পৌরসভার নির্বাচন একদিনে করার কথা ভাবছে নির্বাচন কমিশন। সেক্ষেত্রে মেয়াদোত্তীর্ণ দু’শতাধিক পৌরসভায় একই দিনে ভোট হতে পারে।

মঈনুল হক চৌধুরীবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Oct 2015, 03:25 PM
Updated : 7 Oct 2015, 03:25 PM

গত বছর উপজেলা নির্বাচন পাঁচ ধাপে ভোট করে গোলযোগ-সহিংসতা ও অনিয়মের তিক্ত অভিজ্ঞতার পর পৌরসভায় একদিনে করার পরিকল্পনা চলছে।

এরপর এ বছরের এপ্রিলে ঢাকা ও চট্টগ্রামের তিনটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণও এক দিনে হয়।

সর্বশেষ পৌর নির্বাচন চার দিনে হয়েছিল।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, নভেম্বরের দ্বিতীয়ার্ধে পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার লক্ষ্যে ভোটার তালিকা প্রস্তুতসহ আনুষঙ্গিক প্রস্তুতি চলছে, যাতে ডিসেম্বরের শেষভাগে পৌর নির্বাচন করা যায়। একদিনে ভোটের ইঙ্গিত দিয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বছরের শেষভাগে নির্বাচন উপযোগী হবে যেসব পৌরসভা, সেগুলোতে একসঙ্গে একদিনে করা যেতে পারে।

“বেশি পৌরসভা এক ফেইজে হয়ে গেলে যেগুলো বাকি থাকবে তা মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ বিবেচনায় পর্যায়ক্রমে করা যেতে পারে।”

তবে এখনও এ বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান ইসি সচিব।

“নির্বাচন উপযোগী পৌরসভাগুলোর তালিকা আমরা পেয়েছি। এরপর কমিশন সভায় তা উপস্থাপন করা হবে। কেন একদিনে করা হবে কিংবা কয়েক ধাপে করা হবে-তা পর‌্যালোচনা করে ইসি ফাইনাল ডিসিশন দেবে।”

জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এখনও ইসি সচিবালয় ভোটের বিষয়ে সার্বিক তথ্য আমাদের কাছে উপস্থাপন করেনি। পৌরসভাগুলোর মেয়াদ বিবেচনা করে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবনা পেয়ে আগের অভিজ্ঞতা ও পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।”

একদিনে ভোট করার পক্ষপাতি এই কমিশনার বলেন, “আমি একা চাইলে তো হবে না। সব কমিশনার এক সিদ্ধান্তে পৌঁছতে হবে।”

পৌরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠপর্যায়ে ভোটার স্থানান্তর কার্যক্রম নভেম্বরে শেষ করার জন্য মাঠ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছে ইসি।

জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব মাহফুজা আক্তার স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে যে সম্ভাব্য ২৪৫টি পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সেসব পৌরসভার ভোটার স্থানান্তর কার্যক্রম ১০ নভেম্বরের মধ্যে শেষ করতে হবে।

নির্বাচনের তারিখ, প্রথম সভা অনুষ্ঠানের তারিখ ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ জানিয়ে ইতোমধ্যে দেশের ৩২৩টি পৌরসভার তালিকা দিয়েছে সরকার। মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ থেকে পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতাও রয়েছে।

স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন অনুযায়ী প্রথম সভা থেকে পরবর্তী ৫ বছর মেয়াদ রয়েছে পৌরসভার।

কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন বর্তমান ইসির অধীনে ২০১৩ সালে পাঁচ ধাপে উপজেলা ভোট হয়। প্রথম ধাপ সুষ্ঠুভাবে হওয়ার পর বাকি চার ধাপে অনিয়ম-গোলযোগ-দখলের অভিযোগ উঠে। এসময় কাজী রকিবের বিদেশ সফর ও ভারপ্রাপ্ত সিইসির দায়িত্বে থাকা আবদুল মোবারককেও সমালোচনার মুখে পড়তে হয়।

ভোট শেষে নির্বাচন কমিশনার আবু হাফিজ বলেছিলেন, আর ধাপে ধাপে ভোট করবেন না তারা।

তারপর এবছর এপ্রিলে ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে ভোট একদিনে করে ইসি।

সর্বশেষ এ টি এম শামসুল হুদার কমিশন ২০১১ সালে ১২, ১৩, ১৭ ও ১৮ জানুয়ারি চার দিনে পৌরসভায় ভোট করে।

তখন রাজনৈতিক দলগুলো প্রকাশ্যে দলীয় সমর্থন দিয়ে প্রার্থীও ঘোষণা করেছিল। তাতে প্রধান দুই দলের পরই ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীরা বেশি পৌরসভায় মেয়র হন।

এবারও প্রার্থীদের রাজনৈতিক দলের সমর্থন পেতে বাধা নেই নির্বাচনী আইনে। তবে নির্র্দলীয় নির্বাচনটি দলীয়ভাবে করতে আইনে পরিবর্তন আনতে হবে।