বাসভাড়া: ৫০ পয়সার জায়গায় বাড়ল ৫ টাকা

গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পর বিআরটিএ নগরীতে প্রতি কিলোমিটারে ১০ পয়সা বাসভাড়া বাড়ানোর নির্দেশনা দিলেও সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়েছে রাজধানীর একটি পরিবহন কোম্পানি।

ফয়সাল আতিকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Oct 2015, 04:46 PM
Updated : 7 Oct 2015, 03:12 PM

অক্টোবরের শুরু থেকে বর্ধিত ভাড়া কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও পঞ্চম দিনে এসে বর্ধিত হারে ভাড়া আদায় শুরু করে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে কমলাপুর রুটের এটিসিএল পরিবহন।

মঙ্গলবার ঢাকার বিভিন্ন স্থানে এটিসিএলের টিকিট কাউন্টারগুলো ঘুরে দেখা যায়, আগের সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকার জায়গায় ১৫ টাকার সিল মেরে নতুন ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।

আরামবাগ থেকে মোহাম্মদপুর পর্যন্ত আগের ভাড়া ২০ টাকার জায়গায় এখন নেওয়া হচ্ছে ২৫ টাকা। অথচ বিআরটিএর বর্ধিত ভাড়ার তালিকায় এ রুটে সর্বোচ্চ দূরত্বের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯ টাকা।

প্রেসক্লাবের সামনে দায়িত্বরত এটিসিএলের টিকেট ব্যবস্থাপক বাপ্পী বলেন, “আগে সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকা ছিল, সোমবার থেকে ১৫ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। আগে যেখানে ১৫ টাকা নেওয়া হত এখন সেখানে নেওয়া হচ্ছে ২০ টাকা।”

মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা পিন্টু বলেন, “নতুন করে ভাড়া বৃদ্ধির আগেও এটিসিএল নামের এই বাসটি বেশি ভাড়া নিত। কিছুদিন আগে বিআরটিএ ভাড়া বাড়ানোর পর শহরের অন্যান্য বাস সার্ভিসগুলোর তুলনায় সবচেয়ে বেশি ভাড়া বাড়িয়েছে তারা। সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়েছে।

“মোহাম্মদপুর থেকে সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে আসতে আগে ১০ টাকা দিতে হত। মঙ্গলবার মাত্র পাঁচ কিলোমিটারের এই দূরত্বের জন্য ১৫ টাকা করে ভাড়া নিয়েছে তারা। অথচ বিআরটিএ’র ঘোষণা অনুযায়ী মাত্র ৫০ পয়সা ভাড়া বাড়ানোর কথা ছিল।”

ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে ওই কাউন্টারে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা সেলিনা পারভীন বলেন, “বাস মালিকদের কাছে আমরা সাধারণ যাত্রীরা জিম্মি। এ নিয়ে বলার কিছু নেই। তারা বেশি ভাড়া নির্ধারণ করলে আমরা তো দিতে বাধ্য।”

প্রেসক্লাব থেকে ধানমন্ডি ১৫ নম্বরে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন রেশম উন্নয়ন বোর্ডের এই কর্মকর্তা। আগের দিন এই পথে ১৫ টাকা ভাড়া থাকলেও এদিন ২০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছিল।

ভাড়া বাড়ানোর অজুহাতে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে এটিসিএলের অন্যতম ব্যবস্থাপক ওহিদুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পরীক্ষামূলকভাবে আমরা এই ভাড়া আদায় করছি। দু/এক দিনের মধ্যে বিআরটিএ’র সঙ্গে কোম্পানির আরেকটি বৈঠক হওয়ার কথা আছে। সেই বৈঠকের পর ভাড়া কমানোর চিন্তা রয়েছে।”

বর্তমানে বাস চালানোয় ব্যয় বেড়ে গেছে দাবি করে তিনি বলেন, “খুচরা যন্ত্রাংশ ও জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে কোম্পানি তেমন লাভ করতে পারছে না। এছাড়া যানজটের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়িগুলো রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকছে। ফলে ট্রিপের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এসব সমস্যার সমাধান করা গেলে পরিবহনের ভাড়া আরও কমানো সম্ভব।”

গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির পর গত ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরী এলাকায় সিএনজিচালিত বাস, মিনিবাস ও অটোরিকশার ভাড়া পুনর্নির্ধারণ করে দেয় সরকার।

সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১ অক্টোবর থেকে বাসের ভাড়া প্রতি কিলেমিটারে ১০ পয়সা বাড়িয়ে এক টাকা ৭০ পয়সা করার কথা বলা হয়। মিনিবাসের ভাড়াও ১০ পয়সা বেড়ে এক টাকা ৬০ পয়সা হয়েছে।