কর্মবিরতি চলছে প্রাথমিক শিক্ষকদের

ঘোষিত স্কেলে একাদশ গ্রেডে বেতন প্রাপ্তিসহ ছয় দফা দাবিতে সারাদেশে চার ঘণ্টার কর্মবিরতি কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Oct 2015, 03:42 PM
Updated : 6 Oct 2015, 03:42 PM

শিক্ষকদের চারটি সংগঠনের জোট প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক ফেডারেশনের আহ্বানে মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত টানা তৃতীয় দিনের মতো এই কর্মসূচি চলে।

জোটভুক্ত সংগঠন প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি শাহিনুর আল আমীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই কর্মবিরতি পালিত হয়েছে।

ফেডারেশনের নেতারা বিভিন্ন স্কুল পরিদর্শন করে শিক্ষকদের কাছে ৬ দফা দাবির যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করেছেন বলেও জানান তিনি।

অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতি হলেও কয়েকটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের পাঠদানে অংশ নিতে দেখা গেছে। রাজধানীর মহাখালীর আব্দুল হামিদ দর্জী বিদ্যালয় তার একটি। এই বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলছেন, বার্ষিক ও প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার আগে শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে তারা ক্লাসে আসছেন।

ক্লাস নিচ্ছেন রাজধানীর মহাখালীর আব্দুল হামিদ দর্জী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা

শিক্ষক নেতা শাহিনুর বলেন, দাবির বিষয়ে সরকারের কোনো মহল থেকে আশ্বাস না পাওয়ায় তারা কর্মবিরতি চালিয়ে যেতে ‘বাধ্য’ হচ্ছেন।

“সরকারের বিভিন্ন মহলকে বারবার আমাদের দাবির কথা বলা সত্ত্বেও এবিষয়ে সরকার আমাদের আশ্বাস দেননি। আমাদের দাবির কথা আমরা মাননীয় মন্ত্রী, সচিব ও মহাপরিচালক মহোদয়কে বারবার জ্ঞাত করেছি।”

নতুন বেতন কাঠামোয় নিজেদের আপত্তির বিষয়ে তিনি বলেন, একজন সদ্য যোগদানকারী প্রধান শিক্ষক যে স্কেলে বেতন পাবেন, ১৫ বছর চাকরি করার পর একজন সহকারী শিক্ষক ওই স্কেলে উপনীত হন।

”বর্তমান উপজেলা শিক্ষা অফিসার ৯ম গ্রেডে বেতন পান। তার সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার ১০ম গ্রেডে বেতন পান এবং প্রধান শিক্ষক ১১তম গ্রেডে বেতন পান। আর সহকারী শিক্ষকগণ প্রধান শিক্ষক থেকে ৩ গ্রেড নিচে বেতন পান। অথচ থাকার কথা ছিল প্রধান শিক্ষকদের নিচেরই গ্রেড।”

বেতন বৈষম্য দূর করার পাশাপাশি সরাসরি প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ বন্ধ করে সহকারী শিক্ষকদের মধ্য থেকে নিয়োগের দাবিও রয়েছে এই আন্দোলনকারীদের।

এছাড়া যোগ্যতা ও দক্ষতার ভিত্তিতে বিভাগীয় পরীক্ষার মাধ্যমে মহাপরিচালক পদ পর্যন্ত শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির সুযোগ দেওয়া, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার জন্য ন্যূনতম স্নাতক ডিগ্রি শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ, জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ অনুযায়ী শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল ঘোষণা এবং সব প্রাথমিক বিদ্যালয় অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চালু করার দাবিও রয়েছে তাদের।

৪ থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালনের পর ১০ থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালনের কর্মসূচিও রয়েছে এই শিক্ষকদের।