আদালতে এসেও ‘অনুপস্থিত’ সাকাপত্নী, পিছিয়ে গেছে শুনানি

যুদ্ধাপরাধে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায় ফাঁসের মামলায় তার স্ত্রী আদালতে এলেও তাকে ‘অনুপস্থিত দেখিয়ে’ অভিযোগ গঠনের শুনানি পেছানোর অভিযোগ উঠেছে আসামিপক্ষের বিরুদ্ধে।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Oct 2015, 06:16 AM
Updated : 6 Oct 2015, 06:16 AM

ঢাকার সাইবার অপরাধ দমন ট্রাইবুনালে সোমবার আলোচিত এ মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে গেছে ষষ্ঠবারের মত। এ বিষয়ে শুনানির জন্য ১৫ অক্টোবর নতুন দিন রেখেছেন বিচারক।   

আদালতে উপস্থিত আইনজীবীরা জানান, সাকার স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী ও ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী সোমবার ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়ে হাজিরার কাগজ দাখিল করেন। বেলা ২টায় শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও তা শুরু হতে বিকাল ৪টা বেজে যায়।

সানাউল ইসলাম টিপু নামের একজন আইনজীবী জানান, শুনানি শুরু হওয়ার ঘণ্টাখানেক আগে হঠাৎ করেই সাকার স্ত্রী হাজিরার কাগজ তুলে নেন এবং এজলাস ছেড়ে বেরিয়ে যান। হুম্মাম এরপরেও সেখানে ছিলেন।

পরে ‘অসুস্থতার কারণে’ ফারহাতের অনুপস্থিতির কথা বলে অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য সময়ের আবেদন করেন তার আইনজীবীরা।

এ সময় বিচারক এ কে সামশুল আলম রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য জানতে চাইলে পাবলিক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীম বলেন, এর আগেও বেশ কয়েকবার অভিযোগ গঠনের শুনানি পেছানো হয়েছে।

এরপর বিচারক আসামির সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য নতুন তারিখ রাখেন বলে আদালতে উপস্থিত আইনজীবী প্রিয়লাল সাহা জানান।   

কারাগারে থাকা সাকার আইনজীবী একেএম ফখরুল ইসলাম, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অফিস সহকারী (সাঁটলিপিকার) ফারুক হোসেন, সাকার ম্যানেজার একেএম মাহবুবুল আহসান ও ট্রাইব্যুনালের পরিচ্ছন্নতাকর্মী নয়ন আলীকে সোমবার শুনানির জন্য আদালতে হাজির করা হয়।

ফখরুলের জুনিয়র আইনজীবী মেহেদী হাসান এ মামলার একমাত্র পলাতক আসামি। তার বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে।

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন চৌধুরীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

তবে রায় ঘোষণার আগেই সাকার স্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্য এবং আইনজীবীরা রায় ফাঁসের অভিযোগ তোলেন। তারা ‘রায়ের খসড়া কপি’ সংবাদকর্মীদের দেখান।

পরে ট্রাইব্যুনালের নিবন্ধক একেএম নাসির উদ্দিন মাহমুদ একই বছরের ২ অক্টোবর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে শাহবাগ থানায় এই মামলা করেন।

রায় ফাঁসের ঘটনায় আটক ট্রাইব্যুনালের পরিচ্ছন্নতাকর্মী নয়ন আলী ও সাঁটলিপিকার ফারুক হোসেন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত বছর ২০ নভেম্বর রাজধানীর সেগুনবাগিচায় নিজের চেম্বার থেকে গ্রেপ্তার হন ব্যারিস্টার ফখরুল।

তদন্ত শেষে গত বছর ২৮ আগস্ট এই মামলায় সাতজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. শাহজাহান।

সারাজীবন বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ও দাম্ভিক মন্তব্যের কারণে বিতর্কিত সাকা চৌধুরীর আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়েছে গত ১ অক্টোবর। কাশিমপুর কারাগারে তাকে মৃত্যু পরোয়ানাও শোনানো হয়েছে। তিনি রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করবেন বলে তার আইনজীবী ইতোমধ্যে জানিয়েছেন।