সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে ‘মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ (সংশোধন) অধ্যাদেশ’ জারির এই সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা সাংবাদিকদের বলেন, গত ১৭ অগাস্ট মন্ত্রিসভা ‘মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ (সংশোধন) আইন-২০১৫’ এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছিল।
“আপাতত সংসদের অধিবেশন না চলায় এবং বিষয়টি জরুরি বিবেচিত হওয়ায় তা অধ্যাদেশ জারির প্রস্তাব মন্ত্রিসভা অনুমোদন করেছে।”
সংসদ বসার অপেক্ষা না করে এখনই কেন অধ্যাদেশ আকারে জারি করতে হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সারা পৃথিবীতেই মুদ্রাপাচার একটি বড় সমস্যা হিসেবে বিবেচিত। মুদ্রা পাচার প্রতিরোধের ক্ষেত্রে সরকারের কার্যক্রম আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিকভাবে পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ণ করা হয়। এ ধরনের একটি মিশন ১১-১২ অক্টোবর বাংলাদেশে আসছে।
“আমরা যদি এর আগেই আইনের রূপ দিতে পারি, তাহলে তাদের কাছে আমাদের অগ্রগতি ভিজিবল হয়। মূল্যায়নে আমরা ভালো করব।”
বিদ্যমান আইনে মুদ্রাপাচারের ঘটনা তদন্তের সার্বিক দায়িত্ব দেওয়া ছিল দুদকের ওপর। কোনো ক্ষেত্রে দুদক অন্য কোনো সংস্থাকে দায়িত্ব দিলে তারপর তারা এ তদন্তে যুক্তি হতে পারত।
অনুমোদিত অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, ঘুষ ও দুর্নীতি সংক্রান্ত মুদ্রা পাচারের ঘটনা ঘটলে তা তদন্তের দায়িত্ব দুদকের হাতে থাকবে। অন্যান্য অপরাধের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সংস্থা (পুলিশ, এনবিআর বা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর) তদন্তের দায়িত্ব নেবে।
মুদ্রাপাচার আইনে দুদকের ভার লাঘব করতে দুদক আইন সংশোধনের প্রস্তাবেও গত ১৭ অগাস্ট অনুমোদন দিয়ে রেখেছে মন্ত্রিসভা।
বিদ্যমান মুদ্রাপাচার আইনে যৌথ তদন্তের বিধান না থাকলেও অধ্যাদেশে তা রাখা হয়েছে। অর্থাৎ, প্রয়োজনে একাধিক সংস্থা যৌথভাবে এ ধরনের অভিযোগের তদন্ত করতে পারবে।
২০১২ সালের মুদ্রাপাচার আইনে ৪ থেকে ১২ বছর কারাদণ্ডের যে বিধান ছিল, অধ্যাদেশে তা বহাল রাখা হলেও বাড়ানো হয়েছে অর্থদণ্ডে।
বিদ্যমান আইনে পাচার হওয়া অর্থের কমপক্ষে দ্বিগুণ অথবা ১০ লাখ টাকার মধ্যে যেটি বেশি হবে- সেই পরিমাণ জরিমানার কথা বলা আছে। এই অংক বাড়িয়ে ১০ লাখের জায়গায় ২০ লাখ টাকা করা হয়েছে।
মুদ্রা পাচার আইন সংশোধনের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে আরও শক্তিশালী করা হয়েছে বলে গত ১৭ অগাস্ট জানিয়েছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।