আইএসের ‘দায় স্বীকার’ গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র: বার্নিকাট

বাংলাদেশে বিদেশি নাগরিক হত্যায় জঙ্গি সংগঠন আইএসের ‘দায় স্বীকার’র বিষয়টিকে যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে বলে দেশটির রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট জানিয়েছেন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Oct 2015, 03:00 PM
Updated : 5 Oct 2015, 11:59 AM

রোববার চট্টগ্রামে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর যৌথ সমুদ্র মহড়া ‘কারাট-২০১৫’ (কোপারেশন অ্যাফ্লট রেডিনেস অ্যান্ড ট্রেইনিং) এর সমাপনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি।

বার্নিকাট বলেন, “বাংলাদেশে বিদেশি নাগরিক হত্যায় আইএসের দায় স্বীকারকে আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি। সেটার সত্যতা যাচাইয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার।”

শনিবার রংপুরের কাউনিয়ায় জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি মুখোশধারী দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন।  মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) এক টুইটে ওই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে বলে রাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়।

এর আগে গত সোমবার ঢাকায় ইতালীয় নাগরিক চেজারে তাভেল্লা খুন হওয়ার পরেও আইএসের পক্ষ থেকে দায় স্বীকার করা হয়েছিল বলে জঙ্গি হুমকি পর্যবেক্ষণকারী ‘সাইট ইন্টিলিজেন্স গ্রুপ’ জানিয়েছিল।

তবে ওই হত্যাকাণ্ডে আইএসের সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ ‘পাওয়া যায়নি’ জানিয়ে তাদের দাবি নাকচ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বাংলাদেশে আইএসের তৎপরতার খবর নাকচ করেছেন।

শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “এখনো পর্যন্ত বলতে পারি আমাদের এখানে আইএস বা তেমন কোনো সংগঠনের তৎপরতা গড়ে উঠতে পারেনি।”  

মধ্যপ্রাচ্যের বিরাট অংশ দখল করে খিলাফত প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছে আইএস।

ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা তদন্তে সহযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্রের যে উদ্যোগ দেখা গেছে এক্ষেত্রেও তেমনটি করার  পরিকল্পনা আছে কি না জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, “বিদেশি নাগরিক হত্যার ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত চলছে। আমরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি।”

সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ভূমিকাকে যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্বের সঙ্গে দেখে বলে মন্তব্য করেন দেশটির রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে নৌবাহিনীর সহকারী নৌ প্রধান (অপারেশন্স) রিয়ার এ্যাডমিরাল আওরঙ্গজেব চৌধুরী বলেন, “যৌথ এ সমুদ্র মহড়া নৌবাহিনীর সমুদ্র বন্দর ও আশপাশের এলাকায় সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালনা, জলদস্যু দমন, সমুদ্র সম্পদ রক্ষা, পণ্য পরিবহনকারী বাণিজ্যিক জাহাজগুলোর নিরাপত্তায় নৌবাহিনীর সক্ষমতা বাড়াবে।”

এছাড়া নৌবাহিনীর সমুদ্রে হারিয়ে যাওয়া জাহাজ অনুসন্ধানের সক্ষমতা তৈরিতেও এ মহড়া কাজ দেবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মহড়া বিষয়ে রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট বলেন, “নিরাপত্তা সম্পর্কের মূল ভিত্তি হচ্ছে সমুদ্রের নিরাপত্তা। আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় সমুদ্র যোগাযোগের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী আমেরিকা। সেই স্বাধীনতা রক্ষায় মিত্রদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র গত ৭০ বছর ধরে কাজ করে আসছে।”

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর পঞ্চম যৌথ মহড়া ‘কারাট’ চট্টগ্রাম নৌ-অঞ্চলে শুরু হয়েছে গত বুধবার থেকে।  

মহড়ায় নৌ বাহিনীর বানৌজা বঙ্গবন্ধু, বানৌজা সমুদ্র জয়, বানৌজা আবু বকর, বানৌজা বিজয়, বানৌজা দুর্জয় ও বানৌজা ধলেশ্বরী অংশগ্রহণ করে।  অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর যুদ্ধ জাহাজ ইউএসএস ফোর্ট ওর্থ, ইউএসএনএস সেফগার্ড, পি-৩সি ও এমএইচ-৬০আর মহড়ায় অংশ নেয়।