আন্দোলনরত শিক্ষকদের এক হাত নিলেন প্রধানমন্ত্রী

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আন্দোলনের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যতদিন এই আন্দোলন শেষ না হচ্ছে, ততদিন তাদের বর্ধিত বেতনও নেওয়া উচিৎ হবে না। 

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Oct 2015, 10:25 AM
Updated : 4 Oct 2015, 10:26 AM

অষ্টম বেতন কাঠামোতে ৯১ শতাংশ বেতন বাড়ানোর কথা মনে করিয়ে দিয়ে রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমার মনে হয় একটু বেশি দিয়ে ফেলেছি। একটু কমায় দেওয়া ভাল ছিল।”

সপ্তম বেতন কাঠামোতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেকশনগ্রেডপ্রাপ্ত অধ্যাপকরা সচিবের সমান গ্রেড-১ স্কেলে বেতন পেতেন। জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকরা গ্রেড-২ এবং অধ্যাপকরা গ্রেড-৩ এ বেতন পেতেন।

অষ্টম বেতন কাঠামোতে ‘সিলেকশনগ্রেডপ্রাপ্ত অধ্যাপক’ পদটি বিলুপ্ত করে সিলেকশনগ্রেডপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকদের সচিবদের সমান গ্রেড-১ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে জ্যেষ্ঠ সচিবদের জন্য নতুন একটি বিশেষ গ্রেড তৈরি করা হয়েছে।

আন্দোলনরত শিক্ষকরা বলছেন, আমলারা নিজেদের জন্য বিশেষ গ্রেড তৈরি করলেও শিক্ষকদের সিলেকশনগ্রেডপ্রাপ্ত অধ্যাপক পদটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। ফলে অধ্যাপকরা আমলাদের নিচের স্কেলে থাকছেন।

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিক শিক্ষকদের আন্দোলনের বিষয়টি তুলে ধরে জানতে চান, এ বিষয়ে সরকারপ্রধান কোনো হস্তক্ষেপ করবেন কি না।    

জবাবে প্রধানমন্ত্রী ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “উনাদের কোনো কথা নেই, বার্তা নেই, আমাদের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ করে দেবে, কেন বন্ধ করে দেবে? শিক্ষকরা আন্দোলন করতে যাবে কিসের জন্য? আর যদি করতে হয়, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ করার কোনো রাইট তো তাদের নেই।”

শিক্ষকদের জন্য সচিবদের সমান সুযোগ সুবিধা দাবি করার আগে কে কি সুবিধা সরকারের কাছ থেকে পান- তা হিসেব করে দেখতে বলেন শেখ হাসিনা। 

তিনি বলেন, সচিবসহ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসরের বয়স যেখানে ৫৯ বছর, সেখানে শিক্ষকরা ৬৫ বছর বয়স পর্যন্ত চাকরি করতে পারেন। আর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করার সুযোগ পেলেও সচিবরা তেমন সুযোগ পান না।  

“যদি সমান করতে হয়, তাহলে তো সব কিছুই সমান সমান হতে হবে। চাকরির বয়স তো কমাতে হবে। আর যতদিন আন্দোলন শেষ না হবে ততদিন বর্ধিত বেতন নেবে না, এই তো… সেই সিদ্ধান্তও দিক, যে বর্ধিত বেতন নেবে না কেউ।” 

এ বিষয়ে শিক্ষকদের আন্দোলন করার দরকার ছিল না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে তার হস্তক্ষেপ করার কিছু নেই।

“আন্দোলন যেহেতু করছেন- মাননীয় অর্থমন্ত্রী আছেন, শিক্ষামন্ত্রী আছেন, তারা দেখবেন। কমিটি করা হয়েছে, তারা দেখবে। আমরা উনাদের (শিক্ষক) অনুরোধ করব, ছেলেমেয়েগুলোর ভবিষ্যত যেন নষ্ট না করে।”