মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল ও কল্যাণপুর বাস স্ট্যান্ড ঘুরে স্বাভাবিক পরিস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
এই দুই জায়গায় অগ্রিম টিকেটধারীদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পাঠানোয় ব্যস্ত ছিলেন পরিবহন ব্যবস্থাপকরা।
যাত্রী ও বাস ব্যবস্থাপকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১১ থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে ২২ থেকে ২৪ তারিখের অগ্রিম টিকেট যাত্রীদের হাতে চলে গেছে। এখন নির্ধারিত সময়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা করছেন যাত্রীরা।
কল্যাণপুরের হানিফ এন্টারপ্রাইজ কাউন্টার থেকে ২২ তারিখের টিকেট আগেই সংগ্রহ করা ছিল ব্যাংক কর্মকর্তা ওবায়দুল্লাহ’র। সকাল ১১টায় দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে বাসে চেপেছেন তিনি।
ওবায়দুল্লাহ বলেন, “এখন পর্যন্ত ভিড় কমই দেখতে পাচ্ছি। ঠিক সময়েতো বাসে উঠছি, দেখা যাক বাড়ি কখন পৌঁছাই।”
গাবতলী বাস টার্মিনালে থেকে সকালে বরিশালগামী প্রকৌশলী এনায়েত হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাকে কোন ঝামেলা পোহাতে হয়নি। অগ্রিম টিকিট পেতে কোন সমস্যা হয়নি। আজ (মঙ্গলবার) বাড়ি যাচ্ছি। কাউন্টারে খোঁজ নিয়ে জেনেছি গাড়ি শিডিউল টাইমেই আসবে।”
কাউন্টার ব্যবস্থাপকরা জানিয়েছেন, শিডিউল অনুযায়ী তাদের সব বাস ছেড়ে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত যানজট না থাকায় ঠিক সময়েই ফিরতে পারছে বাসগুলো।
এই কাউন্টার থেকে হানিফের জয়পুরহাট, ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুরগামী বাস ছেড়ে যায়।
হাবিব জানান, সকাল ৭টা থেকে প্রতি ঘণ্টায় নির্দিষ্ট গন্তব্যে বাস ছেড়ে গেছে। কাল যেগুলো ঢাকা থেকে যাত্রা করেছিল, সেগুলোও ঠিক সময়ে ফিরে এসেছে।
যাত্রীদের সুবিধার্থে অতিরিক্ত ‘রিজার্ভ’ বাস রাখা আছে বলে জানালেন হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী পরিবহন ও এসআর ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপকরা।
তবে এখন পর্যন্ত কোনো ‘রিজার্ভ’ বাসের প্রয়োজন হয়নি বলে জানিয়েছেন কল্যাণপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জগামী শ্যামলী বাস কাউন্টারের ব্যবস্থাপক কামরুজ্জামান।
মহাসড়ক যানজটমুক্ত রাখতে পারলে সকলের যাত্রা নির্বিঘ্ন করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেন তিনি।
রংপুরগামী হানিফ এন্টারপ্রাইজের একটি এসি বাসের শিডিউল বিঘ্নিত হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েন এর যাত্রীরা। রংপুর থেকে ফিরতে দেরি হওয়ায় ১০টার গাড়ি ছাড়ে বেলা সাড়ে ১২টায়।
দুপুর ১২টায় ওই বাসের যাত্রী মতিঝিলে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আবদুল মান্নান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “১০টার গাড়ি এখনো ছাড়ে নাই। কাউন্টারের থেকে স্পষ্ট কিছুই বলছে না। আল্লাহই জানে কখন ছাড়বে।”
অন্যদিকে, গাবতলীতে দক্ষিণবঙ্গ রুটের কোনো কোনো কাউন্টারে অতিরিক্ত যাত্রী না পাওয়ার হতাশাও আছে।
যাত্রীদের কোনো ভোগান্তি আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা-বরিশালগামী সৌদিয়া ট্রাভেলস এর কাউন্টার ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ বলেন, “ভোগান্তি হওয়ার জন্য তো যাত্রী থাকতে হবে। যাত্রীই তো নাই। গতবছরও এ রকম সময়ে সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে ১৩টা ট্রিপ ছেড়েছিলাম। আজকে এখন পর্যন্ত ছেড়েছি মাত্র ৮টা।”
তবে আগামীকাল দুপুর থেকে যাত্রীসংখ্যা বাড়বে বলে আশাবাদী ঢাকা-খুলনা রুটের সোহাগ পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার রাকিব হাসান।
গাবতলী থেকে সাতক্ষীরাগামী সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মামুনুর রশিদ বলেন, “আগে আমাদের রুটে ভোগান্তি হত। যাত্রীরাও নানা হয়রানির শিকার হতেন। তবে এ বছর কোন ভোগান্তি হচ্ছে না ”
যাত্রী কম থাকায় এমনটি ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা তার।