সম্প্রতি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের এক অনুষ্ঠানে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে এই টাকা অলস পড়ে থাকার তথ্য উঠে আসার পর নতুন প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, এই তহবিল ব্যবহারের উদ্যোগ নেবেন তিনি।
বুধবার সচিবালয়ে টেলিকম খাতের প্রতিবেদকদের সংগঠন ‘টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ’ এর সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে সেই পরিকল্পনা জানান তারানা।
তিনি বলেন, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি সেবা সম্প্রসারণ, উন্নয়ন ও পরামর্শমূলক কাজে এ তহবিল ব্যয় করা হবে।
“বিভিন্ন দুর্গম এলাকায়, চা বাগান এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কম, হাওর এলাকা, বন্যাদুর্গত এলাকায় পানি উঠে যায়, সে সমস্ত জায়গায় কম্পিউটার গ্রাম বা কম্পিউটার হাট করা। কম্পিউটার থাকবে, কানেকটিভিটি থাকবে, সেখানকার গ্রামবাসীকে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দেব। এটা একটা স্কুলের মতো হবে। পরবর্তীতে যেন বাচ্চারা কম্পিউটার জ্ঞান নিয়ে বড় হয়।”
বাংলাদেশের বৃদ্ধ নিবাসগুলোতে ইন্টারনেট সংযোগ ও কম্পিউটার দেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে প্রতিমন্ত্রীর।
সেই সঙ্গে তিনি বলেন, “বিভিন্ন জায়গায় ওয়াইফাই হট স্পট তৈরি করতে পারি কি না, এ বিষয়টাও চিন্তা করা হচ্ছে।”
বিটিআরসি চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস বলেন, তহবিলের টাকা কোন জায়গায় ব্যবহার করা যায়, তা আলোচনা করে ঠিক করা হবে।
যে সব স্থানে টেলিযোগাযোগ সেবা পৌঁছানো দুষ্কর, জীবনযাত্রা কঠিন, সেই সব স্থানের মানুষের বঞ্চনা লাঘবে এই তহবিল ব্যবহারের উপর জোর দেন তিনি।
সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলের এই অর্থ খরচের বিধির মধ্যে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিষয় আছে বলেও জানান বিটিআরসি চেয়ারম্যান।
বাংলাদেশের টেলিকমিউনিকেশনের প্রসারে মোবাইল ফোন অপারেটরদের মোট আয়ের এক শতাংশ কেটে নিয়ে ২০১২ সালের ডিসেম্বরে এই তহবিল গঠন করা হয়। এরপর থেকে ওই তহবিলে অর্থ জমতে থাকে।
স্বচ্ছতার সাথে সাথে প্রকল্পে যেন ধীরগতি না থাকে তার জন্য প্রত্যেক প্রকল্পের সময় নির্ধারণ করে তা বাস্তবায়নের উপর জোর দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “মন্ত্রণালয় সচল থাকলে সকলে সচল হয়।”
টেলিযোগাযোগ খাতে অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে অগ্রগতি না হওয়াতে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
শক্তিশালী করা হবে টেলিটককে
বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটরদের সাথে প্রতিযোগিতার উপযুক্ত করে রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটরকে গড়ে তোলা হবে বলেও জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।
“টেলিটককে বাজারে কম্পিটিটিভ উপযুক্ত করে গড়ে তোলা আমাদের অন্যতম একটা চ্যালেঞ্জ। সেজন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”
“টেলিটককে শক্তিশালী করার আমাদের একটা পরিকল্পনা আছে। টেলিটক নিজের পায়ে দাঁড়াক। দাঁড়িয়ে কম্পিটিটিভ বাজারে যেন কম্পিটিশনে উপযুক্ত হতে পারে।”
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে বেসরকারি খাতের প্রয়োজনের কথা স্বীকার করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আমরা প্রাইভেট সেক্টরকে অবশ্য চাই, তারা বৈধ সুবিধা নিয়ে বৈধভাবে কাজ করবে।
“আমরা একটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে চাই, যাতে টেলিটক স্বাবলম্বী প্রতিষ্ঠান হিসাবে টিকে থাকতে পারে।”