তিন দিন ধরে থানায় পড়ে থাকা ওই গাড়িটিতে শুক্রবার রাতে তল্লাশি চালানো হয় বলে বাঘারপাড়ার ওসি ছয়রুদ্দিন আহমেদ।
গত বুধবার নড়াইল থেকে খুলনা যাওয়ার পথে ওই গাড়িটি ছিনতাইয়ের অভিযোগে আটক করা হয়েছিল যশোরের ঝিকরগাছা থানার কনস্টেবল মিজানকে, যিনি আবার একদিন বাদেই থানা থেকে পালিয়ে গেছেন।
আটক অবস্থায় মিজানকে জিজ্ঞাসাবাদে সন্দেহ হওয়ার পর গাড়িটি তল্লাশি করা হয় বলে ওসি জানিয়েছেন। বাঘারপাড়া উপজেলার ধলগ্রাম রাস্তার মোড়ে মিজানকে আটকের সময় গাড়িটি জব্দ করে থানায় আনা হয়েছিল।
ওসি বলেন, “অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হকের উপস্থিতিতে প্রাইভেটকারটিতে তল্লাশি চালিয়ে গিয়ার বক্সের ভেতরে ১১টি প্যাকেটে লুকিয়ে রাখা সোনার বারগুলো পাওয়া যায়।”
মোট ১১০টি সোনার বার পাওয়া গেছে গাড়িটিতে, যার ওজন ১২ কেজি ৮৩ গ্রাম বলে পুলিশ জানিয়েছে।
মিজান ও তার সঙ্গীরা আটকানোর আগে গাড়িটি নিয়ে নড়াইলের কালনাঘাট এলাকা থেকে খুলনায় যাচ্ছিলেন তৌহিদুর রহমান খান নামে এক ব্যক্তি।
“প্রাইভেটকারের মালিক খুলনার তৌহিদুর রহমানকে আটকে পুলিশের অভিযান চলছে,” সোনা পাওয়ার পর বলেন ওসি।
গাড়ি ছিনতাইয়ের অভিযোগ জানিয়ে তৌহিদুর রহমান বুধবার রাতেই বাঘারপাড়া থানায় দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা করে চলে গিয়েছিলেন।
তাতে অভিযোগ করা হয়, খুলনার পথে যশোরের গাবতলা ব্রিজের কাছে পৌঁছলে দুটি মোটর সাইকেলে ৫-৬ ব্যক্তি তাদের গতিরোধ করে।
“এ সময় তারা নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে চালক মালেকের হাতে হাতকড়া পরিয়ে দেন। ‘গাড়িতে অবৈধ সোনা রয়েছে এবং থানায় নিয়ে গাড়ি তল্লাশি করা হবে’- বলে মিজান গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নেন। পিস্তল দেখিয়ে সবাইকে চুপ করে বসে থাকতে বলে মিজান নিজেই গাড়িটি চালিয়ে কাছের একটি ইটভাটায় নিয়ে যান।”
সেখানে গাড়ির চালক ও আরোহীকে বেধড়ক পেটানোর পর তাদের কাছে থাকা নগদ চার হাজার ৭০০ টাকা ও দুটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয় বলে তৌহিদের অভিযোগ।
এরপর মিজান ও তার সঙ্গীরা গাড়িটি নিয়ে যাওয়ার সময় পথে ধলগ্রাম রাস্তার মোড়ে বাঘারপাড়া থানার এসআই তরুণ কুমার কর গাড়িটি আটকান। তখন অন্যরা পালিয়ে গেলেও মিজান ধরা পড়েন।
মিজানকে আটক করা হলে তিনি যশোরের ঝিকরগাছা থানার কনস্টেবল বলে পরিচয় দেন। পরে তার সত্যতা পায় পুলিশ।
মিজান দাবি করেছিলেন, তার সঙ্গে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) ওয়াচার সাতক্ষীরায় কর্মরত লিপ্টন, পাবনার সুজানগর থানার কনস্টেবল রুবায়েত হোসেন, অভয়নগরের মোশাররফ ও আশরাফ নামে দুই ব্যক্তি জড়িত ছিলেন।
এদিকে আটকের পরদিন ভোরে থানা থেকে পালিয়ে যান মিজান। তার বাড়ি যশোরের পাশের জেলা নড়াইলের নড়াগাতি থানার নয়নপুর গ্রামে।
ঘটনার পর দায়িত্বে অবহেলার কারণে বাঘারপাড়া থানার ওসি কাইয়ুম আলী সরদার, এএসআই নাসির ও কনস্টেবল ওলিয়ার রহমানকে সেদিন বিকালেই ওই থানা থেকে সরিয়ে আনা হয়।