বার কাউন্সিল ভোটের ফলের পরও পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

গণনা ছাড়া বার কাউন্সিল নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হয়েছে তা আইনের দৃষ্টিতে বেআইনি বলে দাবি করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এ জে মোহাম্মদ আলী, যিনি এবারের নির্বাচনে বিএনপি সমর্থক জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল থেকে অংশ নিয়েছিলেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Sept 2015, 07:19 PM
Updated : 3 Sept 2015, 07:19 PM

তার এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, “আমাদের দেশে নির্বাচনে হেরে গেলে নানারকম কথা বলার একটা প্রয়াস খুব স্বাভাবিক।”

গত ২৬ অগাস্ট অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ফল বৃহস্পতিবার সকালে ঘোষণা করা হয়। এতে ১৪টি পদের মধ্যে ১১টিতে বিজয়ী হয়েছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের প্রার্থীরা (নীল প্যানেল)।

এরপর দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির মিলানায়তনে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা সংবাদ সম্মেলন করে তাদের প্রতিক্রিয়া জানায়।

বাংলাদেশ লিগ্যাল প্র্যাকটিশনার্স অ্যান্ড বার কাউন্সিল রুলস-১৯৭২ এর ১৫ বিধি তুলে ধরে মোহাম্মদ আলী বলেন, “ভোট গণনা দুবার হবে।একবার গণনা করে সিলগালা করে পাঠাবেন, চেয়ারম্যান আবার গণনা করবেন।

“উনি (ভাইস চেয়ারম্যান) আইন দেখে করতে সম্মত হয়েছেন, কিন্তু তিনি করতে পারেননি। যেহেতু ঘোষিত একটি ফলাফল পরিবর্তন করা হয়েছে, ছয়কে নয় করা হয়েছে; যেহেতু গণনা করা হয় নাই, ফলাফলটা আইনের দৃষ্টিতে বেআইনি।”

“গণনা ছাড়া রেজাল্ট করার সুযোগ নেই। আইনের ব্যত্যয় করে উনাকে ফোর্স করে একটা ফলাফলের ঘোষণা নেওয়া হয়েছে। গণনা ছাড়া এটি আইনের দৃষ্টিতে অচল।..এখন যেহেতু ব্যালট পেপার খুলে ফেলেছে, এরপর গণনা করলেও আইনের কোনো বিধান ফলো করা হবে না। নির্ধারিত আইনের দৃষ্টিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে গেছে, পুনর্নির্বাচন করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে,” বলেন মোহাম্মদ আলী।

কেন্দ্রের পোলিং স্টেশন থেকে আসা ব্যালট গণনার জন্য ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনের করা একটি দরখাস্তের অনুলিপিও সংবাদ সম্মেলনে সরবরাহ করা হয়।

নীল প্যানেল থেকে অংশ নিয়ে জয়ী মাহবুবউদ্দিন খোকন বলেন, “বেসরকারিভাবে এ জে মোহাম্মদ আলী সাহেব ছয় নম্বর ছিলেন। গণনা ছাড়া রেজাল্টে নয় হয়ে গেছেন ছয় নয়।”

তাদের বক্তব্যের বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, “আইনে চেয়ারম্যান কর্তৃক ব্যালট গণনার করার কথা আছে ঠিকই। প্রথম কথা আছে প্রিসাইডিং অফিসার গুনে ফল একত্রিত করে চেয়ারম্যানের কাছে পাঠাবেন। দ্বিতীয় দফায় আছে চেয়ারম্যান গণনা করবেন, আবার গণনা করবেন এ কথা নেই।

“ওই বিধানটি ১৯৭২ সালে বার কাউন্সিল রুলসে সন্নিবেশিত হয়। অন্ততপক্ষে ২০ টি নির্বাচন হয়ে গেছে। কোনোটিতে চেয়ারম্যান কর্তৃক ভোট গণনার নজির নেই। গেলবার বিএনপির প্রার্থীরা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিলেন। সেবারও আমি চেয়ারম্যান ছিলাম।সেখানেও ভোট গণনা করতে হয়নি।”

এবার প্রশ্ন ওঠার পর পুনঃগণনার সিদ্ধান্ত নিলেও সময়সাপেক্ষ বিষয় বলে তা এড়িয়ে গেছেন বলে জানান মাহবুবে আলম। 

“গণনা করা ৭ থেকে ১০ দিনের ব্যাপার। তারপর ব্যালট গণনা শুরু করলে ব্যালট রাখা নিয়ে প্রশ্ন ওঠবে, গণনা করে কোথায় রাখা হল, পরদিন কখন গণনা শুরু করা হবে ইত্যাদি বিষয়।”

নয়-ছয়ের অভিযোগের বিষয়ে মাহবুবে আলম বলেন, “এটা হাস্যকর।”