রেডিও শো ‘আমার শ্রম, আমার অধিকার’ শুরু হচ্ছে শুক্রবার

শ্রমিকদের অধিকার ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) উদ্যোগে রেডিও শো ‘আমার শ্রম, আমার অধিকার’ শুরু হচ্ছে শুক্রবার থেকে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Sept 2015, 04:06 PM
Updated : 3 Sept 2015, 04:08 PM

বৃহস্পতিবার বিকালে হোটেল সোনারগাঁওয়ে রেডিও শো’র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।

বাংলাদেশ সরকার ও নরওয়ে সরকারের সহায়তায় রেডিও টুডে (এফএম ৮৯.৬) প্রতি শুক্রবার বিকাল ৫টায় এ রেডিও শো প্রচার করবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

রেডিও টুডে’র পরিচালক আতিকুল হক বলেন, তৈরি পোশাক, চিংড়ি প্রক্রিয়াজাতকরণ ও চামড়ার মতো রপ্তানিমুখী শিল্পখাতের শ্রমিকদের উপর নির্মিত ১৬ পর্বের এই রেডিও শো’র প্রথম পর্বে শুক্রবার থাকছে ‘উৎসব ভাতা ও বোনাস’।

এছাড়া ‘নারী শ্রমিকদের অধিকার’, ‘কর্মঘণ্টা ও ওভারটাইম’, ‘ছুটি’, ‘কর্মস্থলে ঝুঁকি ও নিরাপত্তা’, ‘শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় শ্রম পরিদর্শকদের ভূমিকা’, ‘ট্রেড ইউনিয়ন গঠন ও সদস্যপদ লাভ’, ‘চাকরিচ্যুতি, বরখাস্ত বা অপসারণ’ এবং ‘অস্থায়ী ও মৌসুমী শ্রমিকদের অধিকার’র মত বিষয়গুলো নিয়ে আলাদা আলাদা পর্ব থাকবে বলেও জানান তিনি।

আতিকুল বলেন, “শ্রমিকদের অধিকার ও কর্তব্য নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামতের পাশাপাশি টেলিফোনে শ্রমিকদের অংশগ্রহণের সুযোগ থাকবে। শ্রমিকদের গাওয়া গান রেকর্ড করে প্রচার করা হবে। এর মাধ্যমে ভাল ভাল শিল্পীও বের হয়ে আসতে পারে।”

তথ্যমন্ত্রী বলেন, “রেডিও শো’র মাধ্যমে শ্রমিকরা তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হবেন এবং বাইরে যারা আছেন তারা শুনে শ্রমিকদের প্রতি সংবেদনশীল হবেন। সরকারও বুঝবে শ্রম অধিকারের কোথায় কোথায় ঘাটতি আছে এবং সেটা পূরণ করবে।”

মালিক ও শ্রমিকপক্ষ এবং আইএলও’র সঙ্গে দীর্ঘদিন আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে শ্রম আইনকে সংশোধন করা হয়েছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “এটা ইতোমধ্যে সবার কাছে প্রশংসিত হয়েছে এবং শ্রমিকরাও সাধুবাদ জানিয়েছেন।”

শ্রম আইন বাস্তবায়ন কাজ সহজ করার জন্য বিধিমালাও তৈরি করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।

‘শ্রমিকরা মালিকদের মতোই উন্নয়নের সহযোগী’ মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, “আইনটা শ্রমিকপক্ষ যদি না জানেন, কর্তৃপক্ষ যদি নজর না দেন এবং মালিকরা যদি ওয়াকিবহাল না থাকেন তাহলে আইন ও বিধিমালা কাগজেই থেকে যাবে।”

শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, “মালিক-শ্রমিকের মধ্যে এক ধরনের গ্যাপ রয়েছে। মালিক-শ্রমিকের মধ্যে যে বিশ্বাসের ঘাটতি আছে তা দূর করতে সরকার, মালিকপক্ষ ও শ্রমিকদের নিয়ে বিভিন্ন রকম কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।”

এই ‘বিশ্বাসের ঘাটতি’ দূর করতে পারলে উৎপাদন অনেক গুণ বেড়ে যাবে বলে মনে করেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী।

আগামী ১০ দিনের মধ্যে শ্রম বিধিমালা প্রকাশ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমল থেকে শ্রম আইন থাকলেও বাস্তবায়ন হয়নি। কারণ এটা বাস্তবায়নে কোনো বিধিমালা ছিল না।”

সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রায় ২৫০ পৃষ্ঠার শ্রম বিধিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

‘ট্রেড ইউনিয়ন আইন’ পর্যালোচনা করে সহজ করা হয়েছে জানিয়ে চুন্নু বলেন, “কিছু নিয়ম-কানুন মানলেই খুব সহজে ট্রেড ইউনিয়ন করতে পারেন।”

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব মিকাইল শিপার, আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর শ্রীনিবাস রেড্ডি, শ্রমিক লীগের সভাপতি শুকুর মাহমুদ বক্তব্য দেন।