যশোরে ছোট নোট নিয়ে বিপাকে ব্যবসায়ীরা

ছোট নোট জমা দেওয়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন যশোরের ব্যবসায়ী ও ব্যাংকাররা।

শিকদার খালিদ যশোর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Sept 2015, 11:25 AM
Updated : 3 Sept 2015, 12:00 PM

ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকারি ও বেসরকারি কোনো ব্যাংকই ছোট নোট জমা নিতে চায় না।

বেসরকারি ব্যাংকগুলোর অভিযোগ, সোনালী ব্যাংক তাদের কাছ থেকে ছোট নোট না নেওয়ায় তারাও গ্রাহকের কাছ থেকে নিতে পারে না।

তবে, কোনো ব্যাংকই ছোট নোট নেবে না বলতে পারে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা।

ব্যবসায়ীরা জানান, স্থানীয় বিভিন্ন কারখানা, পেট্রোল পাম্প, পরিবহন ব্যবসায়ী, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের এজেন্ট, মোবাইল ফোন কোম্পানির স্থানীয় পরিবেশকদের কাছে প্রতিদিন প্রচুর সংখ্যক ছোট নোট জমা হয়।

এর মধ্যে ২, ৫, ১০, ২০ ও ৫০ টাকার নোট সবচেয়ে বেশি।

ইগলু আইসক্রিমের স্থানীয় পরিবেশক মফিজুর রহমান জানান, তিনি কোনো ব্যাংকেই ২ ও ৫ টাকার নোট জমা দিতে পারেন না। ১০ টাকার নোটের কয়েকটি বান্ডিল নিয়ে গেলে ব্যাংকাররা বড়জোর একটি বান্ডিল জমা নেন।

খুচরা টাকার নোট নিয়ে তাকে প্রতিনিয়ত ঝামেলা পোহাতে হয় বলে জানান তিনি।

রূপচাঁদা সয়াবিন তেলের স্থানীয় পরিবেশক আনন্দ দাস ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, “আমরা এসব ছোট নোট নিয়ে কার কাছে যাব?”

এ ব্যাপারে প্রাইম ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও যশোর শাখার ব্যবস্থাপক এ বি এম হাবিবুর রহমান বলেন, “আমাদের ভল্টে ৭০ লাখ টাকার খুচরা নোট পড়ে আছে। সোনালী ব্যাংক আমাদের ছোট নোট জমা নেয় না বলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।”

ওয়ান ব্যাংকের অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও যশোর শাখার ব্যবস্থাপক আবদুল মান্নাফ বলেন, “সোনালী ব্যাংক আমাদের কাছ থেকে ৫০০ ও ১০০০ টাকার নিচে কোনো নোট জমা নেয় না বলে আমাদেরও ছোট নোট নিয়ে সমস্যা হয়।”

ইস্টার্ন ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়াসহ অন্যান্য বেসরকারি ব্যাংকের যশোর শাখার ব্যবস্থাপকরাও একই কথা বলেন।  

সোনালী ব্যাংক যশোর প্রিন্সিপাল অফিসের সহকারী উপমহাব্যবস্থাপক সাজ্জাদুর আলম বলেন, “আমাদের কর্পোরেট শাখায় ৩৫ জন ক্যাশিয়ার আছেন। তাদের মধ্যে ছয়জন বাংলাদেশ ব্যাংকের খুলনা শাখা ও যশোরের বিভিন্ন ব্যাংকে ক্যাশ সরবরাহের কাজে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত।

“বাকি ক্যাশিয়াররা নিয়মিত গ্রাহকসহ অন্যান্য ব্যাংককেও সেবা দিয়ে থাকেন।”

সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করেও তারা টাকা গোনা শেষ করতে পারেন না বলে জানান সাজ্জাদুর আলম।

তিনি আরও বলেন, “আমাদের শাখায় টাকা রাখার মাত্র একটি ভল্ট রয়েছে। এতে যে পরিমাণ টাকা রাখা যায়, প্রতিদিন তার ৪-৫ গুণ টাকা জমা হয়।”

তিনি জানান, সোনালী ব্যাংক ছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের খুলনা শাখায় টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। বেসরকারি ব্যাংকগুলো সেখানে টাকা জমা দেওয়ার সুযোগ কাজে লাগাতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংক খুলনা অফিসের মহাব্যবস্থাপক প্রকাশ চন্দ্র ভদ্র বলেন, “কোনো ব্যাংক ছোট নোট জমা নেবে না বলতে পারে না। এটা ব্যাংকের লিগ্যাল প্র্যাকটিসের মধ্যে পড়ে না।

“আমি এ ব্যাপারে দ্রুত  ব্যবস্থা নেব।”