হাওর ‘রক্ষায়’ অভিযাত্রা

দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের হাওর এলাকার পরিবেশ রক্ষায় জনসচেতনতা সৃষ্টিতে তিন দিনের অভিযাত্রায় যাচ্ছে পরিবেশবাদী সংগঠন ‘হাওরঅঞ্চলবাসী’।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Sept 2015, 12:24 PM
Updated : 2 Sept 2015, 12:24 PM

বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক মতবিনিময় সভায় ওই অভিযাত্রার বিস্তারিত তুলে ধরেন সংগঠনটির নেতারা।

হাওরঅঞ্চলবাসীর প্রধান সমন্বয়ক হালিম দাদ খান বলেন, “প্রতিবেশী ভারত বরাক নদীর উজানে টিপাইমুখ ড্যাম নির্মাণ, তিস্তার উজানে গজলডোবা ব্যারাজ নির্মাণ ও বিভিন্ন নদীতে ৩০টি সংযোগ খাল কেটে হিমালয় অববাহিকার পানি শুষ্ক অঞ্চলে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে আমাদের হাওর অঞ্চল তার বৈশিষ্ট্য হারাবে, দেশ অনুর্বর লবণাক্ত ভূমিতে পরিণত হবে।”

এ পরিস্থিতিতে হাওর নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে ৩ থেকে ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হাওর অঞ্চলে অভিযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর থেকে শুরু হয়ে হবিগঞ্জের আজমিরিগঞ্জে গিয়ে নৌকা অভিযাত্রা শেষ হবে। পথে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম, মিঠামইন, ইটনা, নেত্রকোণার খালিয়াজুরি, সুনামগঞ্জের শাল্লা ও দিরাইয়ে যাত্রাবিরতি করা হবে।

বৃহস্পতিবার ঢাকার কমলাপুর থেকে প্রায় ৩০ জনের একটি দল কিশোরগঞ্জের উদ্দেশ্যে যাবে। সেখান থেকে সকাল ১০টার দিকে ৬০ সদস্যের একটি দল হাওরযাত্রা করবে বলে জানান সংগঠনের সমন্বয়ক হালিম।

সভায় বলা হয়, সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোণা জেলায় সাড়ে ৮ লাখ হেক্টর হাওর অঞ্চল রয়েছে। হাওরে দেশের ২০ শতাংশ ধান এবং ১৪০ প্রজাতির মাছ উৎপাদিত হয়, বিপুল পরিমাণ পরিযায়ী পাখি আগমনের ফলে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হয়।

পরিবেশকর্মী হাসনাত কাইয়ুম, সাংস্কৃতিককর্মী অরূপ রাহী, প্রকৌশলী ইমরান হাবিব রুমন, জল-পরিবেশ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ম. ইনামূল হক, বাপার সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিনসহ অন্যরা সভায় বক্তব্য রাখেন।

প্রকৌশলী ইমরান হাবিব রুমন বলেন, সমুদ্রসীমা নিয়ে প্রতিবেশী ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের বিরোধ ছিল। পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে সম্ভব না হওয়ায় আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে বিরোধের সন্তোষজনক নিষ্পত্তি হয়েছে। হাওরের পানি প্রবাহের ক্ষেত্রেও একই নীতি অবলম্বন করা যেতে পারে।

তিনি বলেন, “হাওরগুলো ক্ষমাতাসীনদের দখলে চলে যাচ্ছে। দখল ও বিপর্যয় থেকে হওরগুলো রক্ষা করতে না পারলে তা পরিবেশবাদীদের ব্যর্থতা বলেই বিবেচিত হবে।”

কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, হাওরের গুচ্ছগ্রামগুলোতে ‘স্যানিটেশনের’ ব্যাপক সমস্যা রয়েছে। এ নিয়ে ২০ বছর ধরে সরকারকে বিভিন্ন সুপারিশ করে আসছেন তিনি।

“সেখানে উন্মুক্ত মলত্যাগ পদ্ধতির কারণে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হয়। গুচ্ছগ্রামগুলোতে বায়োগ্যাস প্রকল্প চালু করা গেলে একদিকে যেমন জ্বালানি গ্যাসের প্রয়োজন মেটানো যায় তেমনি পরিবেশও রক্ষা হয়।”