পুঁজিবাজারে কারসাজি: প্রিমিয়ামের রায় ১৩ সেপ্টেম্বর

১৯৯৬ সালের শেয়ার কেলেঙ্কারিতে প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে মামলার রায় হবে আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Sept 2015, 10:44 AM
Updated : 9 Sept 2015, 06:07 PM

পুঁজিবাজার সংক্রান্ত বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ হুমায়ুন কবীর বুধবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনে স্থাপিত বিশেষ আদালতে বসে রায়ের দিন ঠিক করে দেন। 

মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। তবে আসামিরা পলাতক থাকায় যুক্তিতর্ক শুনানি হবে না।

এ মামলায় আসামিরা হলেন প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান এম এ রউফ চৌধুরী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মশিউর রহমান, পরিচালক সৈয়দ এইচ চৌধুরী ও অনু জায়গীরদার।

আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজের নামে ১৯৯৬ সালের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার লেনদেন করেন তারা।

ওই সময়ে তারা মিতা টেক্সটাইল, প্রাইম টেক্সটাইল, বাটা সুজ ও বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ার লেনদেন করেন। প্রতিষ্ঠানটি ওই সময়ে মোট ১২৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করে। এর মধ্যে ফরেন ডেলিভারি ভার্সেস পেমেন্টের (ডিভিপি) মাধ্যমে ৮৫ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছিল।

ওই সময়ে রউফ চৌধুরী ২১ লাখ ৪৩ হাজার ৬৩টি শেয়ার বিক্রি করেন, যার মূল্য ছিল ৬৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের নথিপত্র অনুযায়ী, আসামিরা এসিআই লিমিটেডের ১ লাখ ৬৪ হাজার ৮১৯টি শেয়ার বিক্রি করেন। অথচ ব্যাংক রেকর্ড অনুযায়ী শেয়ার বিক্রির পরিমাণ ২ লাখ ৩৪ হাজার ৫৩৮টি। এর মধ্যে ফরেন ডিভিপি মাধ্যমে লেনদেন অনিষ্পত্তি হওয়া শেয়ারের পরিমাণ ছিল ৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।

একইভাবে আসামিরা ডিভিপির মাধ্যম ছাড়াও স্থানীয়ভাবে শেয়ারের অন্যতম ক্রেতা-বিক্রেতা ছিলেন। আসামিরা ওই সময়ের মধ্যে বেক্সিমকো ফার্মার ১৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৯৫টি শেয়ার বিক্রি করেন। এর মধ্যে ডিভিপির মাধ্যমে ৯ লাখ ৯৮ হাজার ৭০০টি শেয়ার বিক্রি করেন। আর এখানেও অনিষ্পত্তি হওয়া শেয়ার ছিল ১ লাখ ১ হাজার ৫০০টি।

এইসব ফরেন ডিভিপি মাধ্যমে লেনদেন নিষ্পত্তির জন্য প্রতিষ্ঠানটি স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংক ও ইন্দোসুয়েজ ব্যাংক ব্যবহার করত।

আসামিদের এ ধরনের কার্যকলাপে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি হয়েছে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।

পুঁজিবাজারে ২০০৯ সালেও ধস নামলে এ রকম বিক্ষোভ হয়

বিএসইসির প্যানেল আইনজীবী মাসুদ রানা খান সাংবাদিকদের বলেন, “আসামিরা ১৯৯৬ সালে প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার লেনদেন করেছেন, যা তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে। এর ফলে ওই সময়ে অনেক বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

“আজ (বুধবার) আমরা পর্যালোচনা, আইনগত দিক ও আইন লঙ্ঘনের সব তথ্য উপাত্ত আদালতে দাখিল করেছি। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ মামলার রায় ১৩ সেপ্টেম্বর ঘোষণার দিন নির্ধারণ করেন।”

এই মামলার সাক্ষী ছিলেন- বিএসইসির সাবেক নির্বাহী পরিচালক এমএ রশিদ খান (বাদী), বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান মনির উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম চৌধুরী ও অধ্যাপক জহুরুল হক।

১৯৯৬ সালের শেয়ার কেলেঙ্কারি তদন্তে গঠিত অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম চৌধুরী নেতৃত্বাধীন কমিটির প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী ১৯৯৭ সালে ঢাকা মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতে কয়েকটি মামলা করে বিএসইসি। এসব মামলার বিচারে গঠিত হয় পুঁজিবাজার ট্রাইব্যুনাল।