জাহাঙ্গীরনগরে ‘বড়ভাইকে’ পেটাল ছাত্রলীগকর্মীরা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে গণিত বিভাগের চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত করেছে ছাত্রলীগের একদল কর্মী।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Sept 2015, 06:10 PM
Updated : 1 Sept 2015, 06:10 PM

সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনের খাবারের দোকানে মারধরের এ ঘটনা ঘটে। হামলার শিকার ও হামলাকারীরা সবাই ওই হলের ছাত্র।

আহত শিক্ষার্থী সেলিম আহমেদকে সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সেলিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হলের সামনের দোকান থেকে খেয়ে বের হওয়ার সময় দেখি লোকপ্রশাসন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাফি আহমেদ ও তার বন্ধুরা দোকানের সামনের সরু রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে। তাদের যাওয়ার জন্য জায়গা দিতে বললে রাফি আমার পরিচয় জানতে চায়।

“পরিচয় দিলে আমি তার সিনিয়র জেনেও আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতে থাকে।”

এসময় বাকবিতণ্ডার এক পর্যয়ে রাফি তার দুই বন্ধু- ফার্মেসি বিভাগের অনিক এবং ইতিহাস বিভাগের বাঁধনসহ আরও সাত-আটজনকে নিয়ে বাঁশ দিয়ে তাকে মারতে শুরু করে বলে জানান তিনি।

“এসময় আমাকে বাঁচাতে এলে আমার বন্ধু জোনায়েদুল হকও তাদের হামলায় আহত হয়। এক পর্যায়ে মার খেয়ে আমি মাটিতে পড়ে গেলে রাফি আমার বুকে সজোরে একাধিক লাথি দেয়,” হাসপাতালে শুয়ে বলেন সেলিম।

সেলিমের বন্ধু জোনায়েদুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মারধরের এক পর্যায়ে রাফি জ্ঞান হারালে তার মুখে পানি দিয়ে জ্ঞান ফিরিয়ে আবারও তাকে মারা হয়।”

এসময় সেখানে উপস্থিত হলের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা রাফিকে ফেরানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় বলে জানান তিনি।

ছাত্রলীগ করেন কি না জানতে চাইলে রাফি নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদের অনুসারী বলে দাবি করেন।

মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি তাকে কোনো মারধর করিনি। বরং সেই আগে আমাকে ধাক্কা দেয়।”

তবে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপ সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক ও মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক ছাত্র বশির আহমেদ বলেন, “অভিযুক্তরা সবাই হল ছাত্রলীগের জুনিয়র কর্মী।”

ক্যাম্পাসের বাইরে রয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “বিষয়টি আমি শুনেছি। ক্যাম্পাসে আসলে বিস্তারিত জানাতে পারব।” 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জুনিয়ররা সিনিয়রকে পেটাবে এটা দুঃখজনক। আমি আজকের ঘটনার বিষয়ে শুনেছি। তদন্ত করে যথাযথ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এ বিষয়ে মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক উবাইদুর রহমান বলেন, “ঘটনাটি শুনেছি, লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”