আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা নিয়ে বিরক্ত সংস্কৃতিমন্ত্রী

আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা নিয়ে যারপরনাই বিরক্তি প্রকাশ করেছেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Sept 2015, 05:03 PM
Updated : 1 Sept 2015, 05:03 PM

এসব বৈঠককে ‘আন্তঃযন্ত্রণা’ সভা বলে মনে করেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বুড্ডিস্ট ট্যুরিজম’ নিয়ে একটি কর্মশালায় বাংলাদেশে পর্যটনের বিকাশে সমস্যা নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে এ প্রসঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, “আমি জানি না, প্রকাশ্যে এ কথাটি আমার বলা উচিৎ কি না। আন্তঃমন্ত্রণালয় যদি কোনো সভা হয় আমি সেটাকে আন্তঃযন্ত্রণা মনে করি।

“মানে এত জটিলতা হয়! একটা সরকারের পলিসি আমরা ইপ্লিমেন্ট করতে যাচ্ছি; আমরা তো সবাই সরকারেরই অংশ। আমরা তো এখানে কো-অপারেট করব।”

সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, “পর্যটন নিয়ে কাজ করছে মেনন ভাইয়ের মন্ত্রণালয়। কিন্তু বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় যথেষ্ট নয়। এখানে দরকার রোডস অ্যান্ড হাইওয়েজ, রাস্তা তৈরি করবে কে? তাদের লাগবে; পিডব্লিউডিকে লাগবে; রেলওয়েকে লাগবে। সবাই যদি এ জায়গাটিতে একসঙ্গে না আসে, একার পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয়।”

দখল হয়ে যাওয়া কয়েকটি ঐতিহাসিক ভবন পুনরুদ্ধারে সরকারের সীমাবদ্ধতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন আসাদুজ্জামান নূর।

তিনি বলেন, “লালবাগ কেল্লারও একটি অংশ দখল হয়ে আছে। কিছুটা আমরা উদ্ধার করেছি, এখনও কিছু অংশ দখলে আছে। আমরা কিছু বললে ১৮৫৬, ১৯১২ সালের কাগজ দেখায়। আমি বলেছি, আরে ভাই মোঘল বাদশাহদের কি টাকার এতই অভাব হয়েছিল যে আপনার কাছে জমি বিক্রি করেছে?”

প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনায় কী করা যাবে আর কী করা যাবে না সে বিষয়ে ইউনিসেফের গাইডলাইনে স্পষ্ট উল্লেখ আছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “আমরা কিন্তু সে গাইডলাইন ফলো করছি না। আর আমরা করব কী করে, সেখানেও বিপদ আছে। আমাদের সরকারের সমস্যা এগুলো।”

প্রত্নতত্ত্বকে ‘খুবই বিশেষায়িত বিষয়’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সমস্যাটা বলি, একজন কর্মকর্তা তিনি হয়তো বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে কাজ করতেন, তাকে আর্কিওলজিকাল ডিপার্টমেন্টের ডিজি বানিয়ে দেওয়া হল।

“তিনি এখানে দুবছর, আড়াই বছর, তিন বছর প্রচুর কাজ করলেন, বেচারা পড়াশোনা করে নিজেকে তৈরি করে একটা জায়গায় কিছু অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করলেন। তিন বছরের মাথায় ওনাকে নিয়ে দিল অন্য কোনো মন্ত্রণালয়ে।

“আর আমাদের এখানে একজনকে দিল, যিনি হয়তো কর্মকমিশনের কাজ করতেন। এভাবেই জিনিসগুলো ঘটছে।”

পর্যটনের উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে নিয়ে একটি টাক্সফোর্স গঠনের পরামর্শও দেন সংস্কৃতিমন্ত্রী।

কর্মশালায় পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, “আমাদের দেশে বৌদ্ধ ঐতিহ্যের অনেক স্মারক রয়েছে। এগুলোকে তুলে ধরতে পারলে প্রচুর ধর্মীয় পর্যটকের এ দেশে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। আর এটি হলে আমাদের পর্যটন অনেক দূর এগিয়ে যাবে।”

পর্যটন দেশের জিডিপিতে বড় অবদান রাখতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

“তবে সীমাবদ্ধতা হলো আমাদের মধ্যে এখনও পর্যটন সংস্কৃতি গড়ে ওঠেনি। এজন্য মানুষকে সচেতন করে তুলতে হবে।”

পর্যটনের উন্নয়নে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসারও আহ্বান জানান পর্যটনমন্ত্রী।