জয়নাল হাজারীর খালাসের রায় বাতিল

ঘোষিত আয়ের বাইরে সম্পদ থাকার মামলায় ফেনীর সাবেক সংসদ সদস্য জয়নাল হাজারীকে হাই কোর্টের দেওয়া খালাসের রায় বাতিল করেছে আপিল বিভাগ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 August 2015, 07:24 AM
Updated : 27 Dec 2021, 12:02 PM

হাই কোর্টে নতুন করে এ মামলার আপিল শুনানির নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।

জয়নাল হাজারীকে খালাস দিয়ে হাই কোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে দুদকের করা লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে সোমবার প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেয়।

আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। জয়নাল হাজারীর পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার।

খুরশীদ আলম পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আপিল বিভাগ হাজারীর খালাসের রায় বাতিল করেছে। এখন হাই কোর্টে তার করা আপিলের পুনঃশুনানি হবে।”

গত তত্ত্বাবাধায়ক সরকারের সময়ে ২০০৭ সালের ২ অক্টোবর ঘোষিত আয়ের বাইরে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ফেনী থানায় আওয়ামী লীগ নেতা হাজারীর বিরুদ্ধে এই মামলা করেন দুদকের উপ পরিচালক সফিকুর রহমান ভূইয়া।

এতে হাজারীর কাছে ঘোষিত আয়ের বাইরে ১ কোটি ১৩ লাখ ৩৯ হাজার টাকার সম্পদ থাকার কথা বলা হয় এবং তিনি নিজের এক কোটি টাকা বোনের নামে এককালীন আমানত হিসেবে সংরক্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ আনা হয়।  

২০০৮ সালের ২৭ নভেম্বর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত এ মামলার রায়ে হাজারীকে ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা; অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়। তার সম্পদ থেকে এক কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করারও আদেশ হয়।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আপিল করেন হাজারী। ২০১১ সালের ৫ ডিসেম্বর হাই কোর্ট তার আপিল মঞ্জুর করে সাজার রায় বাতিল করে।

দুদক এর বিরুদ্ধে ২০১২ সালের ১৪ এপ্রিল লিভ টু আপিল করে, যার শুনানি শেষে সোমবার সর্বোচ্চ আদালত আদেশ দিল।

১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে সাংসদ থাকাকালে জয়নাল হাজারীর বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের অভিযোগ ওঠে। হাজারীর কর্মকাণ্ডের কারণে তখনকার আওয়ামী লীগ সরকারকেও সমালোচনার মুখে পড়তে হয়।

২০০১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ১৬ অগাস্ট রাতে যৌথবাহিনীর (বিডিআর-পুলিশ) তল্লাশির সময় পালিয়ে ভারতে চলে যান ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের তখনকার সাধারণ সম্পাদক হাজারী।

দীর্ঘ আট বছর দেশের বাইরে থাকার পর ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় এলে দেশে ফেরেন তিনি। অর্থ পাচারের একটি মামলায় জামিন চাইতে গেলে ওই বছর ১৫ এপ্রিল আদালত তাকে কারাগারে পাঠায়। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান। 

পলাতক অবস্থায় হাজারীর বিরুদ্ধে মোট ২৭টি মামলা হয়, যার মধ্যে পাঁচটিতে সাজার রায় হলেও উচ্চ আদালত তাকে সবগুলোতেই খালাস দেয়।

বহু ঘটনায় বিতর্কিত এই রাজনীতিবিদ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফেনীর তিনটি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও সেগুলো বাতিল হয়ে যায়।