সোমবার ভোররাতের দিকে উপজেলার কোটবাড়ির নন্দনপুর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে কুমিল্লা ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক ফরিদ আহমেদ জানান।
নিহতরা হলেন- সহিদ মিয়া (৩২), ফজলু (৪০), জাহিদ মিয়া (৪২), আনোয়ার মিয়া (৩৮), শফিকুল (২৮), গেরু মিয়া (৩২) ও জাহিদ ওরফে মাজহার (৪০)।
হতাহত সবার বাড়ি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার খোলাহাট গ্রামে। আহতদের মধ্যে স্বপন ও তাহের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। বাকিদের কুমিল্লা মেডিকেলসহ স্থানীয় বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।
কুমিল্লার ময়নামতি হাইওয়ে থানার ওসি আবদুল আউয়াল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “টিনবোঝাই ট্রাকটি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। পথে চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে রাস্তার উপরে ট্রাকটি উল্টে যায় এবং ঘটনাস্থলেই ছয় শ্রমিকের মৃত্যু হয়।
“গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকায় নেওয়ার পথে আরেক জনের মৃত্যু হয়।”
পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, ট্রাকটিতে ১১জন শ্রমিক ছিলেন। কাজের সন্ধানে তারা গাইবান্ধা থেকে চট্টগ্রামে এসেছিলেন। কিন্তু খারাপ আবহাওয়ায় বন্দরনগরীতে তেমন কোনো কাজ না পেয়ে বাড়ি ফেরার জন্য তারা ট্রাকে করে ঢাকায় যাচ্ছিলেন।
“টাকা ফুরিয়ে যাওয়ায় বাসে ফেরার সামর্থ্য তাদের ছিল না। তাই চট্টগ্রাম থেকে ৫০ টাকা ভাড়া দিয়ে তারা ট্রাকে করে ফিরছিলেন।”
দুর্ঘটনাস্থল নন্দনপুর এলাকার সুজন আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দুর্ঘটনার সময় বৃষ্টি হচ্ছিল। আর সড়কের ওই অংশে ছোট বড় অনেক গর্ত রয়েছে। কিছুদিন আগে মেরামত করা হলেও বৃষ্টির কারণে আবারও নষ্ট হয়ে গেছে।”
দুর্ঘটনার পর উল্টানো ট্রাকটি রাস্তা আটকে থাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট দেখা দেয়। পরে কুমিল্লা ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাক ও নিহত শ্রমিকদের লাশ উদ্ধার করে ময়নামতি হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যায়।
পরে লাশগুলো ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেলে পাঠানো হয়। তবে ট্রাক চালক বা তার সহকারীর কোনো খোঁজ পায়নি পুলিশ।
জেলা প্রশাসক হাসানুজ্জামান কল্লোল জানিয়েছেন, দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ১০ হাজার টাকা ও আহতদের পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।