উচ্চ শিক্ষার মান নিশ্চিতে আইনের খসড়া তৈরি

উচ্চ শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিতকরণ এবং উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অভিস্বীকৃত (অ্যাক্রেডিট) করতে স্বায়ত্তশাসিত একটি কাউন্সিল গঠনে আইনের খসড়া প্রকাশ করেছে সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 August 2015, 06:12 PM
Updated : 30 August 2015, 06:12 PM

শিক্ষা মন্ত্রণালয় রোববার আইনের খসড়াটি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে মতামত চেয়েছে। মতামত নিয়ে আইনটির খসড়া চূড়ান্ত করে অনুমোদনের জন্য তা মন্ত্রিসভায় পাঠানো হবে।

আইন অনুযায়ী গঠিত অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এক বছরের জন্য ‘কনফিডেন্স’ সনদ দেবে। এই সনদ নিয়ে ‘অ্যাক্রেডিটেশন’ সনদের জন্য উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে কাউন্সিলের কাছে আবেদন করবে।

অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর আবেদন যাচাই-বাছাই করে পাঁচ বছরের জন্য অ্যাক্রেডিটেশন সনদ দেবে।

আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকদের মধ্য থেকে অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলে চার বছর মেয়াদে একজনকে চেয়ারম্যান নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি।

আর স্বীকৃত যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পদমর্যাদার তিনজন শিক্ষক এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার নিচে নয় এমন একজনকে কাউন্সিলের পূর্ণকালীন সদস্য নিয়োগ দেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের একজন পূর্ণকালীন সদস্য এবং বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাসোসিয়েশন মনোনীত একজন প্রতিনিধি কাউন্সিলের অবৈতনিক সদস্য নিযুক্ত হবেন।

এছাড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাসোসিয়েশন মনোনীত একজন, বাংলাদেশের বাইরের স্বীকৃত ‘কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স ও অ্যাক্রেডিটেশন সংস্থার’ একজন বিশেষজ্ঞ এবং ‘পেশাগত’ সংস্থার একজন প্রতিনিধিকেও এই কাউন্সিলের সদস্য করা হবে।

খসড়ায় বলা হয়েছে, অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল উচ্চ শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত, অ্যাকাডেমিক প্রোগ্রাম ও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভিস্বীকৃতি এবং এই আইনের আলোকে প্রয়োজনীয় বিধি ও প্রবিধিমালা প্রস্তুত করবে।

“কাউন্সিল প্রত্যেক ডিসিপ্লিনের জন্য আলাদা অ্যাক্রেডিটেশন কমিটি গঠন করবে। এই কমিটির গঠন ও কার্যাবলী বিধি দ্বারা পরিচালিত হবে।”

প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী, অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান, পূর্ণকালীন ও অবৈতনিক সদস্যদের মেয়দ হবে চার বছর। চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলের সদস্যরা দুই বারের অধিক নিয়োগ পাবেন না।

উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ফিসহ ‘কনফিডেন্স’ সদনের জন্য নির্ধারিত ফরমে কাউন্সিলে আবেদন করবে। কাউন্সিল ইস্যুকৃত কনফিডেন্স সনদ এক বছর পর্যন্ত বৈধ থাকবে। এই সময়ের মধ্যে উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অ্যাক্রেডিটেশন সনদের জন্য কাউন্সিলে আবেদন করতে হবে।

কাউন্সিল ‘কনফিডেন্স’ সদনপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে পাঁচ বছরের জন্য অ্যাক্রেডিটেশন সনদ দেবে।

খসড়ায় বলা হয়েছে, কনফিডেন্স বা অ্যাক্রেডিটেশন সনদ ছাড়া কোনো উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিজ্ঞপ্তি বা প্রসপ্রেসক্টাসে প্রতিষ্ঠানটি ‘অ্যাক্রেডিটেশনপ্রাপ্ত’ লিখতে পারবে না।

অ্যাক্রেডিটেশন সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাধ্যতামূলকভাবে সবার দেখার জন্য ওই সনদ অনলাইনে উন্মুক্ত রাখতে হবে।

আইন অনুযায়ী, অ্যাক্রেডিটেশন সনদপ্রাপ্ত কোনো প্রতিষ্ঠান অ্যাক্রেডিটেশন সনদের শর্ত লঙ্ঘন করলে এই সনদ প্রত্যাহার করতে পারবে কাউন্সিল।

এছাড়া অ্যাক্রেডিটেশন সনদপ্রাপ্ত কোনো প্রতিষ্ঠান দোষী প্রমাণিত হলে খসড়া আইনে অনধিক ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা উভয়দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।