রুবেল হত্যা: সেই এসি আকরামকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ

গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে শামীম রেজা রুবেল হত্যা মামলায় তখনকার সহকারী কমিশনার (এসি) মো. আকরাম হোসেনকে খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষকে আপিল করার অনুমতি দিয়েছে আপিল বিভাগ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 August 2015, 11:46 AM
Updated : 31 August 2015, 06:51 AM

এই আদেশের অনুলিপি পাওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে আকরামকে বিচারিক আদালতে আত্নসমর্পণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  

হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) মঞ্জুর করে রোববার প্রধান বিচারপতি এস  কে সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেয়।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যার্টনি জেনারেল মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির। আকরামের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার।

পরে মোমতাজ উদ্দিন ফকির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রুবেল হত্যা মামলায় হাই কোর্ট আকরামসহ ১৩ জনকে খালাস দিয়েছিল। এর মধ্যে আকরামের ক্ষেত্রে লিভ টু আপিল করা হয়। আদালত তা মঞ্জুর করে তাকে নিম্ন আদালতে আত্নসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন। এখন আপিলের ওপর শুনানি হবে।”

২০১১ সালের ৫ মে হাই কোর্টের ওই রায়ে আকরামসহ যে ১৩ জনকে খালাস দেওয়া হয়, তাদের মধ্যে ১২ জনকে  বিচারিক আদালত যাবজ্জীবন ও একজনকে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল।

এছাড়া মামলার আরেক আসামি উপ পরিদর্শক হায়াতুল ইসলাম ঠাকুরের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ হাই কোর্টে বহাল থাকে।

ওই রায়ের পর ২০১২ সালে আকরামের খালাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ লিভ টু আপিল করে, যার ওপর শুনানি শেষে রোববার আদেশ দেয় আপিল বিভাগ।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ১৯৯৮ সালের ২৩ জুলাই গোয়েন্দা পুলিশের এসআই হায়াতুল ইসলাম ঠাকুরের নেতৃত্বে একটি দল ৫৪ ধারায় ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্র শামীম রেজা রুবেলকে আটক করে। পরে ডিবি হেফাজতে থাকা অবস্থায় রুবেলের মৃত্যু হয়।

মো. আকরাম হোসেন

ওই ঘটনায় করা মামলার রায়ে ২০০২ সালের ১৭ জুন ঢাকার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত এসি আকরামসহ ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এ ছাড়া মুকুলি বেগম নামের এক আসামিকে এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আপিল করেন আসামিরা। নয় বছর পর খালাসের রায় পেয়ে ২০১১ সালের ৯ মে কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।

তার সঙ্গে খালাস পাওয়া অন্যরা হলেন- পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম, এসআই আমীর আহমেদ তারেক, নুরুল আলম, এএসআই আবদুল করিম, হাবিলদার নুরুজ্জামান, কনস্টেবল রাতুল পারভেজ, মীর ফারুক, মংশেওয়েন, আবুল কালাম আজাদ, কামরুল হাসান, জাকির হোসেন ও মুকুলি বেগম।

গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, মিরপুর বেনারসি পল্লীর কাছে নিজের চারতলা বাড়ি 'হোসাইন ভিলা'য় থাকেন আকরাম।

সুইডেন আসলাম, বিকাশ, জোসেফসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তারে সাফল্যের কারণে পদকপ্রাপ্ত সাবেক এই সহকারী কমিশনারের দাবি, রুবেলকে তিনি চিনতেন না। তিনি ‘পেশাগত প্রতিহিংসার’ শিকার।