সম্প্রতি র্যাব কর্তৃক চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘শহীদ হামজা ব্রিগেডের’ কয়েকটি আস্তানা চিহ্নিত করে অস্ত্র উদ্ধার ও জঙ্গিদের গ্রেপ্তারের পর বিষয়টি সামনে উঠে এসেছে।
র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দুর্গম পাহাড় ও জঙ্গল থাকায় বৃহত্তর চট্টগ্রামে প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও তৎপরতার জন্য বেছে নিচ্ছে জঙ্গিরা।
“শহীদ হামজা বিগ্রেড চট্টগ্রামভিত্তিক সংগঠন হলেও কর্মীদের দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এখানে আনা হয়। ভৌগলিক সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে চট্টগ্রামে এসে সামরিক প্রশিক্ষণ নেয়।”
তিনি বলেন, চট্টগ্রামে এসে তারা সহজে ছদ্মবেশে থাকতে পারেন এবং বিভিন্ন শিল্প কারখানায় চাকরি নিয়ে আড়াল নেওয়ার সুবিধা থেকে নিরাপদ মনে করে জঙ্গিরা।
১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে চট্টগ্রামের হাটহাজারীর ‘আল মাদরাসাতুল আবু বকর’ মাদ্রাসায় অভিযান চালিয়ে ২৫ জনকে আটকের পর ১২ জনকে গ্রেপ্তার দেখায় র্যাব-৭।
তাদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ২১ ফেব্রুয়ারি বাঁশখালী উপজেলার সাধনপুরের লটমনি পাহাড় থেকে জঙ্গি আস্তানা চিহ্নিত করে বিপুল অস্ত্রসহ পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করে।
র্যাব তখন বলেছিল, হাটহাজারি মাদ্রাসায় আরবি শিক্ষার আড়ালে শিক্ষার্থীদের তাত্ত্বিক এবং বাঁশখালীতে সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হত।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বলেন, খামারের আড়ালে লটমনি পাহাড়ে আস্তানা গেড়ে সেখানে নিয়মিত ‘জঙ্গি প্রশিক্ষণ’ দেওয়া হত।
এরশাদ জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানায়, চট্টগ্রামে এসে নগরীর কর্ণেল হাটে জেএমবি পরিচালিত একটি ফটোকপির দোকানে কাজ নেয়। জেএমবি সদস্যরা বন্দরনগরীতে বিভিন্ন ধরনের প্রায় ১০০টি দোকান পরিচালনা করার কথাও উল্লেখ করে।
কেউ সন্দেহ না করার জন্য নগরীর ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা বেছে নেওয়া হতো বলেও এরশাদ জিজ্ঞাসাবাদে উল্লেখ করে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের মতে, চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষের ধর্মীয় অনুভূতি এবং অবৈধভাবে আসা রোহিঙ্গাদের কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন আস্তানা গড়ে তুলছে।
চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার কুসুম দেওয়ান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই অঞ্চলের মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগানোর পাশাপাশি ধর্মের ‘অপব্যবহার’ করে এই ধরনের জঙ্গি সংগঠনগুলো কাজ করে থাকে।”
এছাড়া চট্টগ্রাম ও বান্দরবানের পাহাড়গুলোকে প্রশিক্ষণের জন্য নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠনগুলো কাজে লাগাতে পারে বলেও মনে করেন তিনি।
কারাগারে আটক জঙ্গি সংগঠন ‘শহীদ হামজা বিগ্রেডের’ অন্যতম সংগঠক মনিরুজ্জামন ডন বাঁশখালীর লটমনি পাহাড়ে জঙ্গি আস্তানা ও অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় দেওয়া জবানবন্দিতে বলেন, ২০১৪ সালের শেষ দিকে তিনি ওই পাহাড়ে এবং ২০১২ সালে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন।