বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাতে রাষ্ট্রদূত তার দেশের এই অঙ্গীকারের কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম পরে সাংবাদিকদের বলেন, “আমেরিকার রাষ্ট্রদূত বলেছেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের উন্নয়নে তার দেশ অঙ্গীকারাবদ্ধ।”
আলোচনায় ‘জিএসপি’ শব্দটি উচ্চারিত না হলেও বার্নিকাট বলেছেন, এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত ‘রাজনৈতিক নয়’।
“তিনি বলেছেন, শর্ত পূরণের জন্য বাংলাদেশ কাজ করে যাচ্ছে। আর যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতারা এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত কর্মীদের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চায়,” বলেন প্রেস সচিব।
বাংলাদেশে কারখানার কর্মপরিবেশ নিয়ে অসন্তোষ জানিয়ে ২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র তাদের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের জন্য অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা (জিএসপি) স্থগিত করে। ওই সুবিধা ফেরত পাওয়ার জন্য পরে বাংলাদেশকে ১৬টি শর্ত দেওয়া হয়।
এর মধ্যে অধিকাংশ পূরণ করে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রতিবেদনও দেওয়া হয়। কিন্তু সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ১২২টি দেশের পণ্যে জিএসপি সুবিধা নবায়ন করলেও ওই তালিকায় বাংলাদেশ আসেনি।
এর প্রতিক্রিয়ায় বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছিলেন, শর্ত পূরণের পরও ‘রাজনৈতিক কারণে’ বাংলাদেশি পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্র।
বৈঠকে প্রতিবেশীদের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ও বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের অগ্রগতি নিয়েও আলোচনা হয়।
প্রেস সচিব বলেন, “রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন বার্নিকাট। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ জাহাজ নির্মাণ ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পেও উন্নতি করছে।”
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বিভিন্ন দেশে শান্তিরক্ষায় নিয়োজিত বাংলাদেশিদের এবং সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অবস্থানের প্রশংসা করেন।
অন্যদিকে মানবজাতিকে ‘সন্ত্রাসের হাত থেকে রক্ষা’ করার পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী অস্ত্র উৎপাদন কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত পাঠানোর বিষয়েও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রাষ্ট্রদূতের কথা হয়েছে বলে প্রেস সচিব জানান।
“তিনি বলেছেন, এ বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। এটা আদালতের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।”
বার্নিকাট বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্থলসীমান্ত চুক্তির বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশংসা করেন। অন্যদিকে শেখ হাসিনা অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য যোগাযোগকে মূল ভিত্তি হিসাবে বর্ণনা করেন এবং বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে সাম্প্রতিক যোগাযোগ চুক্তির কথা বলেন।
অন্যদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদ ও যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের উপ প্রধান ডেভিড মিল এ সময় উপস্থিত ছিলেন।