অবশ্য সাম্প্রতিক ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনাগুলোকে প্রধানমন্ত্রীর সেই ঘোষণার প্রতিফলন বলতে রাজি নন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। আর হাজারীবাগের ঘটনায় স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা মো. আরজু মিয়া নিহতের ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
গত দুই দিনে ঢাকা, মাগুরা ও কুষ্টিয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে সরকারসমর্থক তিনজনের মৃত্যুর প্রেক্ষাপটে বুধবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েন মন্ত্রী।
জবাবে তিনি বলেন, “আমাদের প্রাইম মিনিস্টার মেসেজ আগেই দিয়েছেন। অপরাধী যে কেউ হোক, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। আমরা কাউকে ছাড় দেব না। সে ছাত্রলীগ করুক, ছাত্রদল করুক বা অন্য দল করুক।”
সাম্প্রতিক ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনাগুলো তারই প্রতিফলন কি না জানতে চাইলে কামাল বলেন, “যেটা দেখছেন এটা তার অ্যাকশন আমি বলব না। কয়েকটা বন্দুকযুদ্ধ হয়েছে। সে বন্দুকযুদ্ধে কয়েকজন মারা গেছে। আমরা কোনো সন্ত্রাসীকে ছাড় দেব না।”
মাগুরায় গর্ভস্থ শিশু গুলিবিদ্ধ হওয়ার মামলার তিন নম্বর আসামি মেহেদী হাসান আজিবর ওরফে আজিবর শেখ মঙ্গলবার গভীর রাতে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। রাজধানীর হাজারীবাগে মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগে এক কিশোরকে পিটিয়ে হত্যার প্রধান আসামি আরজু মিয়া র্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন একই রাতে।
সবশেষ কুষ্টিয়ায় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে যুগলীগকর্মী সবুজ হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামি জাকির হোসেন মঙ্গলবার রাতে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন।
আরজু হাজারীবাগ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। র্যাব তাকে বন্দুকযুদ্ধের নামে ‘হত্যা করেছে’ বলে এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছে হাজারীবাগ থানা আওয়ামী লীগ।
প্রতিবছর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর বাংলদেশ বিষয়ক প্রতিবেদনে বন্দুকযুদ্ধ বা ক্রসফায়ারের নামে ‘র্যাব ও পুলিশের বিচারবহির্ভূত হত্যার’ বিষয়টি একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশজুড়ে থাকে।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসাবে ২০১৪ সালে এ ধরনের ঘটনায় ১২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, যে ধারা চলতি বছরও অব্যাহত আছে।
এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “এরা ক্রসফায়ারের শিকার হচ্ছে এটা সঠিক না। র্যাব বলছে এবং পুলিশ বলছে, এগুলো বন্দুকযুদ্ধ।”
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এর মধ্যে একটি ঘটনা ঘটেছে, সেটা আমি দেখছি। কেন ঘটেছে সেটা সম্পর্কে পরে বলব।”
সেটি ‘কোন ঘটনা’- সাংবাদিকরা তা জানতে চাইলে কামাল বলেন, “এটি হাজারিবাগের ঘটনা।”
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সোনারগাঁও হোটেলে ‘রেস্টোরেটিভ জাস্টিস’ বিষয়ে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নেন।