সোয়ানের শ্রমিকদের দাবি আদায়ে সমাবেশ

বন্ধ হয়ে যাওয়া সোয়ান গার্মেন্টের শ্রমিকদের তিন মাসের পাওনা আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বামপন্থি শ্রমিক নেতারা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 August 2015, 07:39 PM
Updated : 3 August 2015, 07:39 PM

সোমবার রাজধানীর শাহবাগে ‘গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র’ আয়োজিত সংহতি সমাবেশ থেকে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।

গত ১০ এপ্রিল থেকে সোয়ান গ্রুপের সোয়ান গার্মেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড ও সোয়ান জিনস লিমিটেড কারখানা দুটি বন্ধ করে দেয় মালিক পক্ষ। এতে কারখানা দুটির ১৩শ’ শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েন।

মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব থাকায় ব্যাংকের সম্পদ বিক্রি করেও শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম।

সোয়ানের শ্রমিকরাও কারখানা বন্ধের পর থেকে ধাপে ধাপে আন্দোলন করে তাদের ন্যায্য পাওনা ফেরৎ চাচ্ছেন।

দীর্ঘদিন আন্দোলনের পর সোয়ান গার্মেন্টের আর্থিক লেনদেনের দায়িত্বে থাকা বেসরকারি ইসলামী ব্যাংক সামাজিক দায়বদ্ধতা বিবেচনায় শ্রমিকদের এক মাসের বেতন পরিশোধের মৌখিক ঘোষণা দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিজিএমইএ ভবনে সেই ঘোষণা বাস্তবায়ন হবে বলে খবর দিয়েছেন কয়েকজন শ্রমিক নেতা।

সমাবেশে সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, “টানা আন্দোলনের কারণে সোয়ান গার্মেন্টের শ্রমিকদের ন্যায্য দাবির আংশিক হলেও পূরণের ঘোষণা এসেছে। সারা দেশের শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধ থেকে আন্দোলন অব্যাহত রাখলে সরকার সব দাবি মেনে নিতে বাধ্য হবে।”

শ্রমিক নেতা মন্টু ঘোষের সভাপতিত্বে এই সংহতি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন শ্রমিক নেতা জসিম উদ্দিন মণ্ডল, কে এম রুহুল আমিন, সিপিবি নেতা হায়দার আকবর খান রনো, গণফোরাম নেতা পঙ্কজ ভট্টাচার্য, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আবু সাঈদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এম এম আকাশ।

রুহুল আমিন বলেন, “শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করা না গেলে, যা যা করা দরকার তাই করা হবে।”

ইসলামী ব্যাংক সোয়ানের সব সম্পদ কুক্ষিগত করার চক্রান্ত করছে বলেও অভিযোগ করেন গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন।

দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ারও আহ্বান জানান প্রবীণ শ্রমিক নেতা জসিম মণ্ডল।

এমএম আকাশ বলেন, সোয়ান গার্মেন্টে যে ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে আইন অনুযায়ী এক্ষেত্রে শ্রমিকরা তিন মাসের বেতন পাওয়ার কথা।

“শ্রমিকদের বিপদকালীন সময়ে অর্থ বরাদ্দের জন্য সরকার রপ্তানির ওপর কর ধরে। সেই করের টাকা থেকে সরকার চাইলে শ্রমিকদের টাকা দিয়ে দিতে পারে।”

শ্রমিকদের উপার্জিত অর্থ থেকে তাদের বকেয়া বেতন দিতে শ্রম মন্ত্রণালয়কে আহ্বান জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক।

শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু ইতোমধ্যে বলেছেন, সোয়ান গ্রুপের শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে কী করা যায়, সে বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করছেন তারা।