নীতিমালার খসড়া: সংবাদপত্র-টিভির ইন্টারনেট সংস্করণেরও নিবন্ধন লাগবে

ইন্টারনেট সংবাদ মাধ্যমের পাশাপাশি যে সব সংবাদপত্র, টেলিভিশন ও রেডিওর অনলাইন সংস্করণ রয়েছে, তাদেরও আলাদাভাবে নিবন্ধন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করে নীতিমালার খসড়া তৈরি করেছে সরকার।

শহীদুল ইসলামবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 August 2015, 02:13 PM
Updated : 3 August 2015, 02:13 PM

‘জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা- ২০১৫’র এই খসড়ার উপর আগামী ১২ অগাস্ট পর্যন্ত সবার মতামত নেবে তথ্য মন্ত্রণালয়।

শীর্ষ গণমাধ্যমগুলোর সম্পাদকদের নিয়ে আলোচনা করে এই নীতিমালার চূড়ান্ত খসড়া করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্যসচিব মরতুজা আহমদ।

তিনি সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা অনলাইনগুলোকে শৃঙ্খলার মধ্যে এনে আরও গতিশীল করতে চাই। অনলাইন সংবাদপত্রের সঙ্গে সংবাদপত্র, টেলিভিশন এবং রেডিওগুলোর অনলাইনও নিবন্ধনের আওতায় আসবে।”

তথ্য প্রযুক্তির প্রসারে ভুরি ভুরি অনলাইন সংবাদপত্র গড়ে উঠলেও তাদের তদারকির কোনো ব্যবস্থা এখনও হয়নি। এসব সংবাদপত্রের অধিকাংশই নামমাত্র বলে অভিযোগ রয়েছে।  

তথ্যসচিব বলেন, বিদ্যমান অনলাইন গণমাধ্যমের মধ্যে কোনগুলো নিবন্ধন পাবে, তা বিধিমালার মাধ্যমে নির্ধারিত হবে।

নীতিমালার খসড়ায় বলা হয়েছে, “দেশে অনলাইন গণমাধ্যমের সংখ্যা বেড়েই চলছে।

“বিদ্যমান অবস্থায় এসব গণমাধ্যম কোনো স্বীকৃতি বা সুযোগ-সুবিধা পায় না। অন্যদিকে গণমাধ্যমের জাতীয় মান রক্ষা করাও সম্ভব হচ্ছে না।”

জনগণের মৌলিক অধিকার ও ব্যক্তি স্বাধীনতা সমুন্নত রেখে গণমাধ্যমগুলোর স্বাধীনতা ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করাই নীতিমালা প্রণয়নের উদ্দেশ্য বলে খসড়ায় বলা হয়েছে।

নীতিমালা অনুযায়ী, সব অনলাইন গণমাধ্যমের সম্পাদকসহ সাংবাদিকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, আর্থিক সঙ্গতি, প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও বেতন কাঠামো বাস্তবায়নে বিধিবিধান মেনে চলতে হবে।

“কাগজ বা সম্প্রচারের জন্য নিবন্ধিত, ডিক্লারেশন বা লাইসেন্সপ্রাপ্ত গণমাধ্যমকে অনলাইন প্রচার, প্রকাশ বা সম্প্রচারের জন্য নিবন্ধিত হতে হবে।”

এসব অনলাইন গণমাধ্যমের নিবন্ধন দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকার স্বতন্ত্র আইন বা বিধিমালা প্রণয়ন করবে উল্লেখ করে খসড়ায় বলা হয়েছে, এতে নিবন্ধন পদ্ধতি, যোগ্যতা-অযোগ্যতা ও বাতিলের বিধান রাখা হবে।

“তবে এই আইন বা বিধিমালা প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত তথ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে। শিগগিরই এই দায়িত্ব কমিশনের উপর ন্যস্ত করবে।”

নীতিমালা প্রণয়নের পর নিবন্ধিত অনলাইন গণমাধ্যমগুলো শর্ত সাপেক্ষে ‘ন্যায় ও সমতার ভিত্তিতে’ সরকারি সহায়তা পাবে বলেও খসড়ায় বলা হয়েছে।

খসড়া অনুযায়ী, অনলাইনের কোনো তথ্য-উপাত্তে কোনো নাগরিক বা প্রতিষ্ঠান সংক্ষুব্ধ হলে তিনি বা ওই প্রতিষ্ঠান তথ্য-উপাত্ত প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কমিশনে অভিযোগ দিতে পারবেন।

কমিশন সরেজমিনে অভিযোগ তদন্ত করে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ৬০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করে সরকারের কাছে প্রয়োজনীয় সুপারিশ করবে।

কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইন-বিধি মোতাবেক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও নীতিমালার খসড়ায় উল্লেখ রয়েছে।

খসড়া নীতিমালার আটটি অধ্যায়ে পটভূমি, নিবন্ধন, তথ্য-উপাত্ত প্রচার, প্রকাশ ও সম্প্রচার, বিজ্ঞাপন, তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ বা সম্প্রচারের অনুপযুক্ততা, কমিশনসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।