একই মামলার আরেক আসামি নজরুল ইসলামকে রোববার গ্রেপ্তার করেছে মাগুরা পুলিশ। এনিয়ে ওই মামলার চার আসামি গ্রেপ্তার হলেন।
জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সুমন (৩৫) রোববার দুপুরে ঢাকায় গ্রেপ্তার হন বলে খবর ছড়িয়ে পড়লেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে তা স্বীকার করা হচ্ছিল না।
রাতে র্যাবের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের জানানো হয়, বিকালে রাজধানীর কল্যাণপুরের একটি বাড়ি থেকে সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর আগে মাগুরা জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলী হোসেন মুক্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, দুপুরে দিকে সিধু নামে এক বন্ধুর কল্যাণপুরের বাসা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সুমনকে তুলে নিয়ে যায়। সিধু তা তাদের জানিয়েছে।
মাগুরা সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা রুস্তম আলীও সাংবাদিকদের জানান, কল্যাণপুর থেকে সুমন গ্রেপ্তার হয়েছে বলে তারা জানতে পেরেছেন।
একই কথা বলেছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ মো. রেজাউল ইসলামও।
দুপুরে মাগুরার পুলিশ সুপার এ কে এম এহসান উল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, ঢাকা থেকে সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন। তবে ঢাকার যোগাযোগ করে মাগুরার কাউকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারেননি।
মামলার ৪ নম্বর আসামি সুমন মাগুরা শহরের কলকলিয়া পাড়ার বাসিন্দা। সংঘর্ষের দিন তিনি ঢাকায় ছিলেন বলে তার পরিবারের দাবি।
এদিকে মাগুরা পুলিশ রোবাবার সন্ধ্যায় ঢাকা-মাগুরা সড়কের ওয়াপদা এলাকা থেকে মামলার ১৩ নম্বর আসামি নজরুলকে গ্রেপ্তার করে।
মাগুরার গোয়েন্দা পুলিশের ওসি, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইমাঊল হক জানান, ঈগল পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসে তল্লাশি চালিয়ে নজরুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ঢাকা থেকে পালিয়ে খুলনা যাচ্ছিলেন।
মাইক্রোবাসের চালক নজরুল মাগুরা শহরের দোয়ারপাড় এলাকার হোসেন কারিগরের ছেলে।
এর আগে ২৬ জুলাই রাতে গ্রেপ্তার করা হয় মামলার ৫ নম্বর আসামি চা দোকানি সুমন এবং ১৪ নম্বর আসামি স্থানীয় মুদি দোকানি সোবহানকে।
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত ২৩ জুলাই বিকালে মাগুরা শহরের দোয়ারপাড়ায় সাবেক ছাত্রলীগকর্মী কামরুল ভূইয়ার সঙ্গে সাবেক যুবলীগকর্মী মহম্মদ আলী ও আজিবরের সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়।
এসময় কামরুলের বড় ভাই বাচ্চু ভূঁইয়ার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী নাজমা বেগম (৩০) ও প্রতিবেশী মিরাজ হোসেন গুলিবিদ্ধ হন, নিহত হন কামরুলের চাচা আব্দুল মোমিন ভূঁইয়া।
গর্ভস্থ সন্তান গুলিবিদ্ধ হওয়ার এ ঘটনায় দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। ওই রাতেই মাগুরায় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে নাজমার গুলিবিদ্ধ শিশুটি ভূমিষ্ঠ হয়। দুই দিন পর তাকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়।
দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় একপক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন গুলিবিদ্ধ নাজমার দেবর কামরুল।
এ ঘটনায় নিহত মোমিনের ছেলে রুবেল ভূঁইয়া ২৬ জুলাই মাগুরা সদর থানায় যে মামলা করেছেন, তাতে মোট ১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। ছাত্রলীগ নেতা সুমনকে করা হয় হুকুমের আসামি।
সংঘর্ষে জড়ানো দুই পক্ষের বিরুদ্ধেই ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে স্থানীয়দের। তবে আওয়ামী লীগের দুই সহযোগী সংগঠন ছাত্র ও যুবলীগের নেতারা এর দায় নিয়ে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।