নির্যাতিত আরিফ মিয়া (১৩) গাইবান্ধা সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। আরিফ উপজেলার গয়েশপুর গ্রামের শহিদুল মিয়ার ছেলে ও রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করে বলে সাদুল্লাপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোসলেম উদ্দিন জানান।
গত ২৫ জুলাই সাদুল্লাপুর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের গয়েশপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটলেও রোববার পুলিশ চার জনকে আটক করলে বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকদের নজরে আসে।
আটককৃতরা হলেন, উপজেলার তরফবাজিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও গয়েশপুর গ্রামের সাদেকুল ইসলাম (৪৫), একই গ্রামের ময়েজ উদ্দিনের ছেলে আবুল কাশেম (৪০), ইব্রাহিম আকন্দের ছেলে ময়নুল ইসলাম (৩৫) ও ফেলানু বেপারীর ছেলে আইয়ুব আলী (৩৮)।
এদের সবাইকে গাইবান্ধা জেলা জজ ও দায়রা জজ আদালত এলাকার সামনের সড়ক থেকে রোববার দুপুর দেড়টার দিকে আটক করা হয় বলে জানান এসআই মোসলেম।
মোসলেম উদ্দিন বলেন, রোববার দুপুরে ওই কিশোরের মা আনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে ১৬ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। মামলার পর আদালতের সামনের সড়ক থেকে পুলিশ তাদের আটক করে।
সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, আরিফের ডান পায় ব্যান্ডেজ করা রয়েছে। এছাড়া বাম পা ও ডান হাতে আগুনের ছ্যাঁকার চিহ্ন রয়েছে।
আরিফ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানায়, গত ২৫ জুলাই রাতে বাড়ির পাশের বিল থেকে মাছ ধরে ফেরার পথে একই গ্রামের মহসিন আলী, ময়নুল ইসলাম ও মধু মিয়াসহ আর দুতিন জন তার পথরোধ করে। মহসিন ও ময়নুল তাদের গরু চুরির ঘটনায় আরিফকে দায়ী করে।
“কিন্তু অস্বীকার করলে তাকে ধরে এলোপাথাড়ি মারধর করে একটি বাড়িতে আটক রেখে চুরির দায় স্বীকার করার জন্য চাপ দিয়ে সারারাত নির্যাতন চালায়।”
এরপর তার দুহাত বেঁধে বাঁশের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ডান পা ভেঙ্গে দেয়। এছাড়া তার বাম পা ও ডান হাতে সিগারেটের আগুনের ছ্যাঁকাও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ আরিফের।
আরিফের বাবা শহীদুল মিয়া জানান, তার ছেলে কোনো চুরির সঙ্গে জড়িত না। অমানুষিক নির্যাতনে ছেলে অসুস্থ হওয়ায় তাকে নিয়ে হাসপাতালে যান।
“নির্যাতনকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে বিষয়টি এতদিন পুলিশকে জানানো হয়নি,” বলেন তিনি।
গাইবান্ধা আধুনিক সদর হাসপাতালে অর্থপেডিক্স বিভাগের চিকিৎসক আবদুল কাদের জানান, আট দিন ধরে আরিফ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। এর মধ্যে তার পা প্লাস্টার করা হয়েছে। এখন এক্সরে করে দেখা হবে পা জোড়া লেগেছে কিনা।
সাদুল্লাপুর থানার ওসি ফরহাদ ইমরুল কায়েস জানান, আরিফকে নির্যাতনের ঘটনাটি তিনি শনিবার সন্ধ্যার দিকে শুনেছেন।