এতে জেলা শহরের সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় ও আদর্শ কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের দিনের পর দিন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি খানা-খন্দের কারণে প্রতিনিয়ত এখানে ঘটছে নানা দুর্ঘটনা।
প্রতিষ্ঠান দুটির ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, প্রায় দুই মাস ধরে প্রবেশ পথ ও মাঠ পানিতে তলিয়ে থাকলেও পৌরসভা বা সংশ্লিষ্ট কোনো দপ্তর থেকে তা নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
গত এক দশকে পৌরসভা পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেন নির্মাণে প্রায় কোটি টাকা ব্যয় করলেও তা জনগণের কোনো কাজে আসেনি বলেও অভিযোগ করেন তারা।
মাগুরা আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ সূর্যকান্ত বিশ্বাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পৌরসভার ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে তিন থেকে চার মাস কলেজের সামনের রাস্তা ও মাঠ পানিতে ডুবে থাকে।
কলেজের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীকে কাদা-পানি ভেঙে কলেজে আসা-যাওয়া করতে হচ্ছে, বলেন তিনি।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও কলেজ ক্যাম্পাসে মাটি ভরাটের জন্য পৌরসভাসহ বিভিন্ন দপ্তরে বহুবার আবেদন করেও কোনো কাজ হয়নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এদিকে শিক্ষা ব্যবস্থার পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির খেলার মাঠ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী কামাল বলেন, “পানিতে কোথাও দাঁড়ানোর জায়গা নেই। এ কারণে আমরা কলেজে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি।”
সরেজমিনে ঘুরে সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে একই চিত্র দেখেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিনিধি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, পানির কারণে পাঠদান ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানটির একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, ক্লাসের ফাঁকে তারা স্কুল মাঠে ফুটবল, ক্রিকেটসহ বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা করত। কিন্তু জলাবদ্ধতার কারণে তা বন্ধ হয়ে গেছে।
তবে এ সব সমস্যা সমাধানে পৌরসভা কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করার বদলে কোটি কোটি টাকার ড্রেন নির্মাণের নামে অর্থ বাণিজ্য করছে বলে দাবি প্রতিষ্ঠান দুটির কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসীর।
মাগুরা কলেজ পাড়ার বাসিন্দা ও আদর্শ কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য আবু রেজা নান্টু বলেন, গত অর্থ বছরে মাগুরা পৌরসভা ড্রেন নির্মাণের জন্য ৩ কোটি খরচ করেছে। আর গত এক দশকে পৌরসভা ড্রেন নির্মাণে ২০ কোটি টাকা খরচ করেছে।
কিন্তু নিম্নমানের কাজ ও অপ্রয়োজনীয় স্থানে অপরিকল্পিত ড্রেন নির্মাণের জন্য তা জনগণের কাজে আসেনি।
এদিকে পৌরসভার প্রকৌশল বিভাগে খোঁজ নিয়ে এ ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌরসভার এক কর্মচারী বলেন, শুধু বিগত অর্থবছর নয়, পূর্বের অধিকাংশ অর্থবছরেই ড্রেন নিমার্ণের জন্য পৌরসভা কোটি-কোটি টাকা খরচ করেছে। তাতে শহরের পানি নিষ্কাশনে কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
আর্থিক সংকটের কারণে ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না উল্লেখ করে প্যানেল মেয়র মীর শহিদুল ইসলাম বাবু বলেন, সার্বিক বিষয়ে মেয়র সাহেব বলতে পারবেন।
এ ব্যাপারে জানার জন্য পৌর মেয়র ইকবাল আকতার খান কাফুরের কাছে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।