ট্রাইবুন্যাল নিয়েও কটাক্ষ করেছিলেন সাকা

যুদ্ধাপরাধে সর্বোচ্চ আদালতের রায়েও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল নিয়ে কটাক্ষের একটি ভিডিও ঘুরছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে।

সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 July 2015, 12:27 PM
Updated : 29 July 2015, 12:27 PM

ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়া ফুটেজে নিজের যুদ্ধাপরাধের বিষয়ে স্বভাবসুলভ উদ্ধত ভঙ্গিতে সালাউদ্দিন কাদেরকে বলতে শোনা যায়, “সাক্ষীর অভাব আল্লাহর মেহেরবানিতে মঈনুদ্দিন আমলেও হয়নি। এই সরকার, কী যুদ্ধ অপরাধ কী, ট্রাইব্যুনাল ওনাদেরও অভাব হবে না। আগামী দিনেও ইনশাল্লাহ সাক্ষীর অভাব হবে না।”

ভিডিওটির একটি অংশে তাকে বলতে শোনা যায়, “গ্রেফতার! আমারে খাসি চুরি, গরু চুরি থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে গেছিল, ২০ মাস ২ কম্বলে শোয়াইছে মঈনুদ্দিন আমলে।

“আর প্রমাণের কথা বলছেন, তাহলে বলি… আশা করি মনে কষ্ট পাবেন না কেউ। সাক্ষী দিয়েছেন, আমার প্রধানমন্ত্রী, আমার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুর্নীতির সাক্ষী দিয়েছেন কারা কারা … শেখ সেলিম, আব্দুল জলিল।”

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত সালাউদ্দিন বরাবরই তার অভিব্যক্তিতে প্রতিপক্ষকে নিয়ে ব্যঙ্গ আর আচরণে ঔদ্ধত্য প্রকাশ করতেন।

তার ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ থেকে রেহাই পাননি মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারক কিংবা প্রসিকিউশনও। বিভিন্ন সময় বিচার কক্ষেও আদালতের প্রতি নানা ধরনের অসম্মানজনক আচরণ করতে দেখা গেছে তাকে।

২০১৩ সালের ১ অক্টোবর সালাউদ্দিনকে ফাঁসিতে ঝুঁলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের রায় পর বিচারকদের প্রতি অশালীন মন্তব্য করেছিলেন তিনি।

সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী নিজের মামলায় আসামিপক্ষের এক নম্বর সাক্ষী হিসাবে সাক্ষ্য দেন। রায়ে আদালত সাক্ষী হিসাবে তার আচরণ মূল্যায়ন করে।

ওই রায়ে ট্রাইব্যুনাল বলে, “প্রতিদিন বিচারকাজের পর যখন বিচারকরা এজলাস ত্যাগ করতো, তখন প্রথা অনুসারে বিচার কক্ষে উপস্থিত সকলে আদালতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে দাঁড়াতো। কিন্তু অভিযুক্ত তার চেয়ারেই বসে থাকতো। বিচারকদের প্রস্থানে তিনি কালেভাদ্রেই দাঁড়াতেন।

“সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের নিয়ে এই ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়েছে। এটা জেনেও তিনি বিচারকদের চেয়ার‌ম্যান সাহেব, মেম্বার সাহেব বলে সম্বোধন করতেন। তিনি দেশের একজন আইন প্রণেতা হয়েও বিচার বিভাগের প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি অসম্মানজনক ছিলো।

“তিনি জনগণের একজন নির্বাচিত প্রতিনিধি হলেও আদালত কক্ষে তার বিচার-বিবেচনা, কার্যক্রম এবং আচার ভালো ব্যবহারের রীতি, শালীনতা এবং নায্যতা অনুসারে হতো না।”

ট্রাইব্যুনালে যেদিন এই মামলার রায় ঘোষণা হয় সেদিন রায় পড়ার শুরু করার ঘণ্টাখানেক পরেই আদালতকে তা পড়া বন্ধ করতে বলেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী।

সেদিন ট্রাইব্যুনালে সারাক্ষণই কখা বলতে দেখা যায় তাকে। কখনো জোরে, কখনো নিচু কণ্ঠে। রায়ের নানা প্রসঙ্গে পাল্টা কথা বলে আসছিলেন তিনি। ব্যঙ্গও করছিলেন মাঝে মাঝে।

পাকিস্তান মুসলিম লীগের নেতা ফজলুল কাদের চৌধুরীর আদর্শ অনুসরণ করেই তার বড় ছেলে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রাজনীতি শুরু হয়।

একাত্তরে হত্যা, গণহত্যা ও নির্যাতনের চারটি ঘটনায় একাত্তরে চট্টগ্রামের ত্রাস সালাউদ্দিনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল, যা বুধবার আপিল বিভাগের রায়ে বহাল রাখা হয়েছে।

(সংশোধিত)

</div>  </p>