ফেনীতে বন্যা: পানিবন্দি ২ লাখ  

টানা বর্ষণে ও পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত ফেনীর সদর উপজেলা ও দাগনভূঞা উপজেলার অর্ধশতাধিক গ্রামের পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।

ফেনী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 July 2015, 11:08 AM
Updated : 29 July 2015, 11:08 AM

এসব গ্রামের দুই লাখেরও বেশি মানুষ পাঁচ দিন ধরে পানিবন্দি রয়েছেন বলে জানান স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তারা।

সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মানিক জানান, টানা বর্ষণে ছোট ফেনী নদীর পানি বেড়ে তার ইউনিয়নের ১৬টি গ্রামের ৪৫ হাজার মানুষ পাঁচ দিন ধরে পানিবন্দি রয়েছে। আর চার দিন ধরে এসব গ্রামের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

সদর উপজেলার বিরলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অর্ধশতাধিক পরিবার আশ্রয় নিয়েছে বলে জানান তিনি।

দাগনভূঞা উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন ভূইয়া জানান, ইউনিয়নের ১০টি গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যা দুর্গত এলাকায় কোনো ত্রাণ সামগ্রী দেওয়া হয়নি। পানি জমে যাওয়ায় তিন দিন ধরে দাগনভূঞার ১১টি বিদ্যালয়ের পাঠ কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

পানির ভেতর দিয়ে চলাফেরা করায় বন্যা দুর্গত এলাকার লোকজনের হাতে ও পায়ে ঘা দেখা দিচ্ছে বলে জানান তিনি।

দাগনভূঞা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা জামশেদ খোন্দকার জানান, সিন্দুরপুর, রাজাপুর, পূর্বচন্দ্রপুর, রামনগার, মাতুভূঞা, ইয়াকুবপুর, জায়লস্কর ইউনিয়নের ৯০ শতাংশ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত সিন্দুরপুর ও রাজাপুর ইউনিয়নে প্লাবিত হওয়া ২০টি গ্রামে ৬৫০ পরিবারের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

পর্যায়ক্রমে বাকি গ্রামগুলোর পানিবন্দি মানুষের মাঝেও ত্রাণ বিতরণ করা হবে বলে জানান তিনি।

বুধবার বন্যা কবলিত এলাকায় সরেজমিনে গেলে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা সাংবাদিকদের কাছে যথাযত ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে জানার জন্য ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রাশসক আবু দাউদ মো. গোলাম মোস্তফার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে ফোনের সংযোগটি কেটে দেন।

এদিকে মুহুরী ও কহুয়া নদীর বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হওয়া ফুলগাজীর ১৫ গ্রামের পানি নেমে গেলেও পার্শ্ববর্তী ছাগলনাইয়া উপজেলায় বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে।

ছাগলনাইয়ার নিম্নাঞ্চলের ১০টি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। পানি জমেছে উপজেলা প্রশাসনসহ সরকারি অফিসগুলোর আঙ্গিনায়।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রমজান আলি প্রমানিক জানান, মুহুরী নদীর পানি বুধবার সকালে বিপদসীমার দেড় মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টি থামলে ভেঙে যাওয়া বাঁধের পাঁচটি স্থান মেরামত করা হবে।