জনকণ্ঠের বিরুদ্ধে রুল, দিতে হবে ইমরানের তথ্য

সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর চূড়ান্ত রায় ঘিরে বিচারকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে নিবন্ধ প্রকাশ করায় দৈনিক জনকণ্ঠ সম্পাদক ও নির্বাহী সম্পাদকের বিরুদ্ধে অবমাননার রুল জারি করেছে সর্বোচ্চ আদালত।

সুপ্রিম কোর্ট প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 July 2015, 04:31 AM
Updated : 3 August 2015, 06:19 AM

ওই নিবন্ধের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে জনকণ্ঠ সম্পাদক আতিকউল্লাহ খান মাসুদ এবং নিবন্ধের লেখক স্বদেশ রায়কে ৩ অগাস্ট আদালতে হাজির হতে হবে।

প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ সালাউদ্দিন চৌধুরীর ফাঁসির আদেশ বহাল রাখার রায় ঘোষণার পর স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই রুল দেয়।

এছাড়া মামলা চলাকালে বিভিন্ন মন্তব্যের কারণে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারের বিষয়েও আপিল আদালত ঠিকানা ও বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়েছে বলে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানিয়েছেন।

‘সাকার পরিবারের তৎপরতা : পালাবার পথ কমে গেছে’ শিরোনামে গত ১৬ জুলাই দৈনিক জনকণ্ঠে স্বদেশ রায়ের লেখা একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়।

এর একটি অংশে বলা হয়,  “৭১-এর অন্যতম নৃশংস খুনী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী। নিষ্পাপ বাঙালীর রক্তে যে গাদ্দারগুলো সব থেকে বেশি হোলি খেলেছিল এই সাকা তাদের একজন। এই যুদ্ধাপরাধীর আপিল বিভাগের রায় ২৯ জুলাই। পিতা মুজিব! তোমার কন্যাকে এখানেও ক্রুশে পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। তাই যদি না হয়, তাহলে কিভাবে যারা বিচার করছেন সেই বিচারকদের একজনের সঙ্গে গিয়ে দেখা করে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবারের লোকেরা? তারা কোন পথে বিচারকের কাছে ঢোকে, আইএসআই ও উলফা পথে না অন্য পথে? ভিকটিমের পরিবারের লোকদেরকে কি কখনও কোনো বিচারপতি সাক্ষাত দেয়। বিচারকের এথিকসে পড়ে! কেন শেখ হাসিনার সরকারকে কোন কোন বিচারপতির এ মুহূর্তের বিদেশ সফর ঠেকাতে ব্যস্ত হতে হয়।”

সালাউদ্দিন কাদেরের রায়ের পর এক সংবাদ সম্মেলনে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “বিচার বিভাগকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্যই এ লেখা। আদালত মনে করে, এতে নানারকম মন্তব্য করে আদালতের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো এবং ভাবমূর্তি নষ্ট করা হয়েছে।”

‘জনকণ্ঠের সাংবাদিক স্বদেশ রায় তার লেখার জন্য কেন তাকে আদালত অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত করা হবে না এবং এ ধরনের লেখা কাগজে ছাপানোর জন্য সম্পাদক আতিকউল্লাহ খান মাসুদকেও সমভাবে দায়ী করে কেন তাকে দণ্ড প্রদান করা হবে না’-এই মর্মে রুল ইস্যু করেছেন বলে জানান অ্যার্টনি জেনারেল।  

মাহবুবে আলম বলেন, তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ইমরান এইচ সরকারের পার্টিকুলার্স (বৃত্তান্ত ও ঠিকানা) আদালতের কাছে জমা দেওয়ার জন্য।

কেন চাওয়া হয়েছে- এ প্রশ্নে তিনি বলেন, “কারণ ইমরান এইচ সরকার বিভিন্ন সময়ে এই মামলা সম্পর্কে উক্তি করেছেন, রায় সম্পর্কে যেসব উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, বিভিন্ন রকম মন্তব্য করেছেন, সে সম্পর্কে তার কাছ থেকে জানতে চাইবেন, এজন্য তার বৃত্তান্ত  চেয়েছেন। আমি তার বিস্তারিত সংগ্রহ করে আদালতে উপস্থাপন করব।”

সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আপিলের চূড়ান্ত রায় নিয়ে ‘ষড়যন্ত্রের’ আশঙ্কা প্রকাশ করে ইমরান এইচ সরকার গত ২৬ জুলাই বলেন, এই যুদ্ধাপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি ছাড়া অন্য কোনো কোনো রায় মেনে নেওয়া হবে না।