এবার ইভিএম ফেরত চাইল ইসি

ত্রুটি সারাতে ব্যর্থ হয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে থাকা নির্বাচন কমিশন এবার বুয়েটকে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ফেরত দিতে বলেছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 July 2015, 06:01 PM
Updated : 28 July 2015, 06:01 PM

সোমবার ইসির মেনটেইন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল জাভীদ বুয়েটের ব্যুরো অব রিচার্স, টেস্টিং এ্যান্ড কনসালটেশন-বিআরটিসি পরিচালককে এ বিষয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন।

২০১৩ সালে রাজশাহী সিটি করপোরেশনে ভোটের সময় ইভিএমের একটি কন্ট্রোল ইউনিটে ত্রুটি দেখা দেয়। কারিগরি ত্রুটি সারতে না পারায় পরবর্তীতে এ প্রযুক্তিটির ব্যবহার স্থগিত রয়েছে।

ইভিএম সঠিকভাবে কাজ না করার কারণ চিহ্নিত করতে পরের বছর ফেব্রুয়ারিতে একটি ইউনিট বুয়েটের কাছে পাঠায়। কারিগরি দিক পরীক্ষা না করে স্থানীয় ব্যাটারি ব্যবহারেরর অজুহাতে বুয়েট গত মার্চে ইভিএমটি ফেরত পাঠায়।

কখনও ইভিএমে স্থানীয় ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়নি- এমন ব্যাখ্যা দিয়ে গত ৭ মে বুয়েটে ফের যন্ত্রটি পাঠিয়ে দ্রুত প্রতিবেদন দিতে অনুরোধ জানায় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।

ইসি কর্মকর্তা ইকবাল জাভীদ জানান, গত ১ জুলাই এ নিয়ে দ্বিতীয় দফায় তাগিদপত্রও দেওয়া হয়। এ অবস্থায় তা ফেরত চাইছে কমিশন।

বুয়েটের বিআরটিসি পরিচালককে চিঠিতে ইসি লিখেছে,  “দুই মাস অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পরও এ সংক্রান্ত কোনো প্রতিবেদন আজ পর্যন্ত পাওয়া যায় নি। এ অবস্থায় ইভিএমের কন্ট্রোল ইউনিটটি ইসি সচিবালয়ে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা নিন।”

ইভিএমে ভারতের সহায়তা নেওয়ার প্রস্তাব

ভারতের সহায়তা নেওয়ার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার জাবেদ আলী কমিশনে প্রস্তাব দিয়েছেন। সেই সঙ্গে বর্তমান ইভিএমে কারচুপি রোধ সম্ভব নয় বলে তা পুনর্গঠনের সুপারিশ করেছেন জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক।

কমিশন সভায় বিষয়টি আলোচনার জন্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ ও অন্য নির্বাচন কমিশনারদের কাছে আনঅফিসিয়াল নোট (ইউ ও নোট) লেখেন দু’জন ইসি সদস্য।

চীন থেকে আমদানি করার পরিবর্তে দেশীয় ব্যাটারি ব্যবহার করতে গিয়ে ‘অচল’ হয়ে থাকা ইভিএম আবার ব্যবহার উপযোগী করতে নির্বাচন কমিশনার মো. জাবেদ আলী এ পরামর্শ দিয়েছেন।

জাবেদ আলী কমিশনের সক্রিয় বিবেচনার জন্যে এক নোটে বলেন, “বর্তমানে ভোটার সংখ্যা প্রায় ১০ কোটি, যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। বর্তমানে সনাতন পদ্ধতিতে হাতে গণনা করে এ বিরাজ সংখ্যক ভোট সময়মতো সম্পন্ন করা দুরূহ হয়ে উঠেছে। প্রয়োজনে এ ব্যাপারে প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও প্রশিক্ষণের জন্য অগ্রসরমান ভারতের সহায়তা নেওয়া যেতে পারে।”

তবে অন্য নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক বলছেন, বিদ্যমান ইভিএম দিয়ে কারচুপি রোধ করা সম্ভব নয়। যন্ত্রটি পুনর্গঠনও দরকার।

আবদুল মোবারক সিইসির কাছে আলাদা ইউও নোটে লেখেন, কমিশনে যে ইভিএম রয়েছে তাতে ভোট সংখ্যার কাগজী রেকর্ডের ব্যবস্থা নেই; ভোটারের পরিচিতি শনাক্তকরণেরও ব্যবস্থা নেই।

“ফলে এ যন্ত্র দিয়ে ভোটে কারচুপি রোধ করা সম্ভব নয়। এখন সচল একটি ইভিএম যন্ত্রাংশ খুলে পরীক্ষা ও পর্যালোচনা করে যন্ত্রটি পুনর্গঠন করা দরকার।”

নির্বাচনে ইভিএম-এর ব্যবহার সংক্রান্ত  আনঅফিসিয়াল নোট দিলেও এখন পর‌্যন্ত তা কমিশন সভার আলোচনার এজেন্ডাভুক্ত হয় নি।