এক-চতুর্থাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে প্রধান শিক্ষক ছাড়া

পদ মর্যাদার উন্নতির পর জটিলতায় নিয়োগ আটকে যাওয়ায় বাংলাদেশের প্রায় ১৬ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের অভাবে ব্যাহত হচ্ছে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের পাঠদান।

শহীদুল ইসলামবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 July 2015, 03:11 PM
Updated : 28 July 2015, 05:18 PM

বাংলাদেশে প্রায় ৬০ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের পদমর্যাদা দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত হওয়ায় নতুন করে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করতে পারছে না প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

অন্যদিকে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা নিয়োগ দিলেও বেতন স্কেল জটিলতায় প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিতে পারছে না।

গত বছরের ৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার পদমর্যাদায় উন্নীতের ঘোষণা দেন।

একই দিন শিক্ষকদের পদমর্যাদা উন্নীতের সঙ্গে বেতন স্কেল উন্নয়ন করে আদেশ জারি করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জ্ঞানেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রায় ১৬ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ ফাঁকা রয়েছে।

ওই সব বিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষককে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালনকারী কয়েকজন সহকারী শিক্ষক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শিক্ষক স্বল্পতার মধ্যে তাদের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের কারণে শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষায় বিঘ্ন ঘটছে।

এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “দাপ্তরিক কাজে উপজেলা বা জেলা সদরে যেতে হয়। তখন অনেক স্কুলই দুজন শিক্ষককে সামাল দিতে হচ্ছে, যা কষ্টসাধ্য।”

নতুন বই হাতে শিক্ষার্থীদের এই উল্লাস অনেকটাই ফিকে হয় পড়ানোর শিক্ষক না থাকায়

অতিরিক্ত সচিব জ্ঞানেন্দ্র বিশ্বাস বলেন, প্রধান শিক্ষকদের পদটি দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত হওয়ায় ওই পদে নিয়োগের ক্ষমতা পিএসসির কাছে চলে গেছে।

প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতি দিয়ে ৬৫ শতাংশ এবং পরীক্ষা নিয়ে বাকি ৩৫ শতাংশ প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয় সরকার।

পিএসসির অধীনে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হতে পারে- এ চিন্তা সামনে রেখে ১৬ হাজার শূন্যপদ পূরণে আর একবার প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিতে চায় মন্ত্রণালয়।

প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ক্ষমতা মন্ত্রণালয়ের হাতে দিতে এ সংক্রান্ত সারসংক্ষেপ অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছে গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে এ বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত দেননি প্রধানমন্ত্রী।

অন্যদিকে প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তাদের সমমানের না হওয়ায় ওই পদে সরাসরি নিয়োগ দিতে পারছে না পিএসসি।

সপ্তম বেতন স্কেল অনুযায়ী, পিএসসি আট হাজারের কম স্কেলের কোনো কর্মকর্তার নিয়োগ দেয় না। প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদা দেওয়া হলেও তাদের বেতন স্কেল নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৪০০ টাকা।

অতিরিক্ত সচিব জ্ঞানেন্দ্র বলেন, পিএসসি যদি প্রধান শিক্ষক নিয়োগও দেয় তবে কমিশনকে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে আলাদা একটি শাখা খুলতে হবে।