জেএমবি আমিরসহ আট জঙ্গি গ্রেপ্তার

নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) ‘ভারপ্রাপ্ত আমির’সহ আট সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকার গোয়েন্দা পুলিশ।

নিজস্ব প্রতিবেদকও আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 July 2015, 04:30 AM
Updated : 28 July 2015, 01:29 PM

সোমবার রাতে গ্রেপ্তারের পর এই আটজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের মাধ্যমে তিন দিনের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারদের মধ্যে আবু তালহা মোহাম্মদ ফাহিম ওরফে পাখিকে জঙ্গি সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত আমির বলে পুলিশ জানিয়েছে।

অন্যরা হলেন- মো. শফিকুল ইসলাম, মো. রুহুল আমিন, মো. ইমদাদুল হক, রফিক আহমেদ ওরফে রয়েল, মো. মোস্তফা, মো. সাখাওয়াত উল্লাহ ও মো. আলী আশরাফ রাজিব।

ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার মুনতাসিরুল ইসলাম জানান, সোমবার গভীর রাতে উত্তরা এলাকায় একটি মেসে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তারের সময় জিহাদি বই ও লিফলেটও উদ্ধার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম-কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, জেএমবি এখন তিনভাগে বিভক্ত। একভাগের নেতা কারাবন্দি মাওলানা সাঈদুর রহমান। গ্রেপ্তাররা তারই অনুসারী।  

“গ্রেপ্তার মোহাম্মদ ফাহিম মাওলানা সাঈদুরের ছোট ছেলে। সেই এখন ভারপ্রাপ্ত আমির। এছাড়া শফিকুল সিলেট, রুহুল ও ইমদাদ ময়মনসিংহ শহরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা। ময়মনসিংহের চুরখাই বাজারে রয়েলের একটি খাবারের দোকান আছে। সেখান থেকে দলে অর্থের জোগান দেওয়া হত।”

এছাড়া মোস্তফা, সাখাওয়াত ও রাজিব জেএমবির গায়েরে এহসার (নিম্ন মাঝারি স্তরের কর্মী) সদস্য বলে ব্রিফিংয়ে জানানো হয়।

মনিরুল বলেন, “অনেকেই মনে করেন, জেএমবি এখন অনেকটা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। তাই নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে গ্রেপ্তাররা উত্তরার একটি মেসে জড়ো হয়ে বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা করতে চেয়েছিল।”

২০০৫ সাল থেকে কারাগারে থাকা জঙ্গি নেতা সাঈদুর রহমানকে যখন আদালতে নেওয়া হয়, তখন কখনো আইনজীবীর মাধ্যমে, কখনো আবার আত্মীয়দের মাধ্যমে সাংগঠনিক নির্দেশনা কর্মীদের কাছে পাঠানো হচ্ছিল বলে মনিরুল ইসলাম জানান। 

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রেপ্তাররা মধ্যপ্রাচ্যের উগ্রপন্থি দল আইএসের সঙ্গে যোগাযোগ করার পাশাপাশি ‘যে কোনো উপায়ে’ সাঈদুরকে মুক্ত করার চেষ্টা করছিল।

“এদের টার্গেট ছিল যে কোনো উপায়ে মাওলানা সাঈদুর রহমান ও আনসারউল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান জসীমউদ্দিন রাহমানীকে কারাগার থেকে মুক্ত করা।”

এই দলের কেউ আইএস-এ যোগ দিতে সিরিয়া গেছে কি-না, তা জানার পাশাপাশি পলাতক জঙ্গিরা কোথায় আছে তা জানতে গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হবে বলে জানান মনিরুল।

বিকালে ওই আটজনকে ঢাকার আদালতে নিয়ে প্রত্যেককে ১০ দিনের জন্য হেফাজতে চেয়ে আবেদন করেন গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ পরিদর্শক সরওয়ার হোসেন।

শুনানি শেষে মহানগর হাকিম আতিকুর রহমান প্রত্যেককে তিন দিন করে গোয়েন্দা হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।

আদালত সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক সুরুজ মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, শুনানিতে আসামিদের পক্ষে কোনো আবেদন নিয়ে কোনো আইনজীবী দাঁড়াননি।