টেন্ডার ১৮ বার: গড়াই সেতুতে রাজস্ব ‘হারাচ্ছে’ সরকার

ইজারার জন্য ডাকা টেন্ডার বার বার বাতিল করে সড়ক বিভাগ নিজেরাই টোল আদায় করায় সরকারের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ফরিদপুর প্রতিনিধিমফিজুর রহমান শিপন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 July 2015, 04:15 PM
Updated : 27 July 2015, 04:15 PM

ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ফরিদপুরের মধুখালীতে গড়াই সেতু গত ১২ মাসের বেশি সময় ধরে সড়ক বিভাগ নিজেদের লোক বসিয়ে টোল আদায় করছে।

সড়ক ও জনপদ বিভাগের টোল আদায় বিবরণীতে দেখা যায়, গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত ফরিদপুর সড়ক বিভাগ টোল আদায় করেছে পাঁচ কোটি ১৫ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। এ হিসেবে গড়ে মাসে তাদের আদায় ৪৬ লাখ ৮৮ হাজার টাকা।

আগের অর্থ-বছরে এই সেতুর টোল আদায় পাঁচ কোটি ৪৯ লাখ টাকায় ইজারা দেওয়া হয়। আর ২০১৪-১৫ অর্থ বছরের জন্য ডাকা টেন্ডারে সর্বোচ্চ দরদাতার ইজারার প্রস্তাবে গড়ে মাসে ৫০ লাখ ৩০ হাজার টাকা দর  প্রস্তাব করা হয়। এ হিসেবে সরকারের ক্ষতি পরিমাণ ৩৭ লাখ ৪৪ হাজার টাকা।

এ প্রসঙ্গে ফরিদপুর সড়ক বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মহিবুল্লাহ সুমন বলেন, “নতুন অর্থ বছরে আমরা চার বার টেন্ডার কল করি, কিন্তু সেখানে বর্ধিত দরে জমা দেওয়া সিডিউলে সব জায়গায় ২৫ শতাংশ হারে গড় বৃদ্ধি করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো।

“এই কারণে আবারো টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে।”

কিন্তু ইজারাদার প্রতিষ্ঠান শ্রাবনী কনস্ট্রাকটশনের স্বত্তাধিকারী মো. সিদ্দিকুর রহমানের দাবি ইজারার অবকাঠামো নির্মাণের দরপত্রের সঙ্গে টোল আদায়ের ইজারার কোন মিল নাই। যিনি সর্বোচ্চ দর দেবেন তাকেই কার্যাদেশ দেওয়াই নিয়ম।

তিনি বলেন, “আমি সর্বোচ্চ দরদাতা হওয়ার পরেও আমাকে ইজারা দেওয়া হয়নি।

“ওই দরপত্রের বিপরীতে আমার ৫১ লাখ টাকার পে-অর্ডার ফরিদপুর সড়ক বিভাগের অনুকুলে জমা দেওয়া হলেও সে টাকাও গত এক বছর আটকে রয়েছে।”

তিনি জানান, সরকার বর্ধিত দর ঘোষণা করলে তার প্রতিষ্ঠান মাসে ৬৩ লাখ টাকা হারে দরপত্র জমা দেয়। তাতেও সাড়া না দিয়ে আগের হারেই সেতু টোল আদায় করতে থাকে সড়ক বিভাগ।

‘সরকার আগের চেয়ে বেশি হারে রাজস্ব হারাচ্ছে’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

কাঙ্ক্ষিত দর না পাওয়ায় এ নিয়ে ১৮ বার টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে উল্লেখ করে ফরিদপুর সড়ক বিভাগের সহকারি প্রকৌশলী ফরিদ হোসেন বলেন, “নতুন অর্থ বছরে সরকারের বর্ধিত দরে পঞ্চম বার টেন্ডার গত সপ্তাহে আহ্বান করা হয়েছে।”

সড়ক বিভাগের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে গড়াই সেতুর টোল আদায়ের দরপত্রে অংশ নেওয়া একাধিক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধিকারী সড়ক বিভাগ নিজেরাই টোল আদায় করায় সরকার মাসে প্রায় ১৫ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন।

এরমাঝে গত মে মাসে টোল আদায়ে ২৫ শতাংশ বর্ধিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।